ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্যে সহযোগিতা করার অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে করা মানহানি মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
মামলা গ্রহণ করার মতো কোনো উপাদান না থাকায় বৃহস্পতিবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার এ আবেদন খারিজ করে দেন।
এর আগে বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদারের আদালতে এ মামলার আবেদন করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী।
মামলায় খালেদা-তারেক ছাড়াও হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরী, খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মুহাম্মদ মামুনুল হক ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীমকে অভিযুক্ত করা হয়।
মামলার আবেদনে অভিযোগে করা হয়, চলতি বছরের ১৩ নভেম্বর রাজধানীর তোপখানা রোডের বিএমএ ভবন মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলামের একটি আলোচনাসভায় সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে কোনো ধরনের ভাস্কর্য থাকবে না এবং জাতির পিতার ভাস্কর্য করতে দেয়া হবে না।
গত ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম হাটহাজারীতে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, মদিনার সনদে যদি দেশ চলে তাহলে কোনো প্রকার ভাস্কর্য থাকতে পারবে না। ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধ না করলে আরও একটি শাপলা চত্বর ঘটাবেন বলে সরকারকে হুমকি দেন।
এ ছাড়া জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনে একটি জনসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে ফয়জুল করীম বলেন, বাংলাদেশে যদি কোনো ভাস্কর্য তৈরি করা হয়, তাহলে সব ভাস্কর্য ভেঙে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে আবারও শাপলা চত্বরে জমায়েত করা হবে।
অভিযোগে আরো বলা হয়, এর আগে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের আগে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, সকাল ৬টার মধ্যে শেখ হাসিনার পতন ঘটাব। তোমরা সেভাবে কাজ চালিয়ে যাও। তারপর বাবুনগরীর হুকুমে হেফাজতে ইসলামের জঙ্গিবাদীরা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অগ্নিসংযোগ করে পবিত্র কোরআন শরিফ পুড়িয়ে ফেলেন। স্বাধীনতার পর থেকেই এ উগ্রপন্থি স্বাধীনতাবিরোধীরা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে এবং জাতির পিতা, দেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে বিশ্বের কাছে দেশকে হেয়প্রতিপন্ন করছে।
এমতাবস্থায় আবার এ স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানিদের দালালচক্র খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ইসলামিক জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী জাতির পিতার ভাস্কর্য বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন কার্যকলাপ ও সংঘাত সৃষ্টি করে তাদের গুণ্ডা বাহিনী দিয়ে গত চার ডিসেম্বর রাতে কুষ্টিয়াতে জাতির পিতার ভাস্কর্যের একটি হাত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের মধুর ভাস্কর্যের একটি কান ভেঙে দেয় বলে অভিযোগে বলা হয়।