অ্যাডিলেডের দুঃসহ স্মৃতি তাড়া করছিল রীতিমতো। এর উপর দলে ছিলেন না নিয়মিত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। মেলবোর্ন টেস্টে তুখোড় ফর্মে থাকা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভঙ্গুর মানসিকতা নিয়ে কতটা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে ভারত? এটা ছিল কোটি টাকার প্রশ্ন।
কিন্তু বক্সিং ডে টেস্টে ভারত দেখালো চমক। বিশেষ করে বললে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানের দক্ষতা। সাথে থাকল বোলারদের প্রবল চেষ্টা। আর ওই সুবাদে মেলবোর্ন টেস্টে হেসেখেলে জিতল ভারত, তাও একদিন হাতে রেখে। মঙ্গলবার ম্যাচের চতুর্থ দিনে অস্ট্রেলিয়াকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। দারুণ জয়ে টেস্ট সিরিজে ১-১ ব্যবধানে সমতা আনল রাহানেরা।
প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল ৮ উইকেটে। মেলবোর্নে ভারতও জিতল আট উইকেটে। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া অল আউট ১৯৫ রানে। সেখানে রাহানের দারুণ সেঞ্চুরিতে ভারত করে ৩২৬ রান। জবাবে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ২০০ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। জয়ের জন্য ভারতের টার্গেট দাঁড়ায় ৭০ রানে। মঙ্গলবার ওই লক্ষ্যে খেলতে নেমে মাত্র দুই উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় ভারত।
লক্ষ্য ছোট হলেও তাতে ছিল রাজ্যের ভয়। কারণ অ্যাডিলেডে এই অস্ট্রেলিয়ার সাথেই দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৩৬ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল ভারত। ওই ভয়ের মাত্রা পেয়েছিল মাত্র ১৯ রানে যখন ভারত দুটি উইকেট হারায়।
স্টার্কের বলে প্রথম আউট হন ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়াল (৫)।
এরপর কামিন্সের বলে বিদায় নেন ওয়ান ডাউনে নামা চেতশ্বর পূজারা (৩)। তবে এরপর আর দলকে বিপদে পড়তে দেয়নি রাহানে-সুবমান জুটি। এই দু’জন দলকে জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। ওয়ানডে স্টাইলে খেলা সুবমান ৩৬ বলে অপরাজিত থাকেন ৩৫ রানে। ছোট্ট ইনিংসে তিনি হাকিয়েছেন সাতটি চার। অন্যদিকে বিজয়ী অধিনায়ক রাহানে ৪০ বলে থাকেন ২৭ রানে অপরাজিত। ম্যাচ সেরাও হয়েছেন অজিঙ্কা রাহানে।
এর আগে দিনের শুরুতে ৬ উইকেটে ১৩৩ রান নিয়ে মাঠে নামে অস্ট্রেলিয়া। মঙ্গলবার চতুর্থ দিনে বাকি চার উইকেটে ৬৭ রান যোগ করতে পারে অস্ট্রেলিয়া। আগের দিন ১৭ রানে গ্রিন ও ১৫ রানে কামিন্স ছিলেন অপরাজিত।
মঙ্গলবার এ দু’জনের ব্যাটেই বলতে গেলে একটু আগায় অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ গ্রিনেরই। ১৪৬ বলে ৪৫ রান করে তিনি ফেরেন সিরাজের বলে জাদেজার হাতে ক্যাচ দিয়ে। পেট কামিন্স করেন ২২ রান। ৫৬ বল খেলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন পেসার মিশেল স্টার্ক। হ্যাজলউড করেন ১০ রান।
ভারতের হয়ে অভিষিক্ত মোহাম্মদ সিরাজ নেন সর্বোচ্চ তিন উইকেট। বুমরাহ, অশ্বিন, জাদেজা দুটি করে উইকেট নেন। যাদব পান একটি।