যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবনে (ইউএস ক্যাপিটল) বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকদের হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজন নিহত হয়েছেন। হামলার সময় গোলাগুলিতে এক নারী নিহত হয়েছেন। আর মেডিকেল ইমারজেন্সিতে নেওয়ার সময় আহত তিনজনের মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ওয়াশিংটন পুলিশ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৪৭ জন জারি করা কারফিউর নির্দেশনা অমান্য করেছিলেন।
এদিকে, দাঙ্গার ঘটনায় ওয়াশিংটনের চারপাশের রাস্তাগুলোতে ভারী পাহারা বসানো হয়েছে। প্রচুর পুলিশ সদস্য রাস্তাঘাট ঘিরে রেখেছে। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি রয়েছে।
ওয়াশিংটন ডিসি পুলিশের প্রধান পিটার নিউশাম বিবিসিকে বলেছেন, এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা ৫২ জনের মধ্যে লাইসেন্সবিহীন পিস্তল বহন করছিলেন চারজন। কারফিউ লঙ্ঘন ও বেআইনি প্রবেশের জন্য ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া একজনকে গ্রেপ্তার করা হয় নিষিদ্ধ অস্ত্র বহনের জন্য।
তিনি আরও জানান, হামলাস্থল থেকে দুটি পাইপ বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি রাজধানীর ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটির কার্যালয়ের সামনে অন্যটি রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির সদর দপ্তর থেকে পাওয়া গেছে।
যা হয়েছিল-
যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবনে (ইউএস ক্যাপিটল) বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকরা ভবনের জানালা ভাঙচুর করে। সেইসঙ্গে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পুলিশ উগ্র জনতাকে হটাতে পুরো ভবন অবরুদ্ধ করে ফেলে।
গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের বিজয় অনুমোদনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা বুধবার কংগ্রেসের এক যৌথ অধিবেশনে বসেছিলেন। বিক্ষোভের নামে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থকদের আগ্রাসী তাণ্ডবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জয় অনুমোদন হয়নি। অবরুদ্ধ পার্লামেন্ট ভবন থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আইনপ্রণেতাদের সরিয়ে নিয়েছে।
ট্রাম্প সমর্থকরা ক্যাপিটল ভবনে ঢুকে পড়ে ভাঙচুর শুরু করেন। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও পেপার স্প্রে ব্যবহার করে পুলিশ। ভাঙচুরের পাশাপাশি সেখানে গোলাগুলিও হয়েছে। বেশ কজন ক্যাপিটল পুলিশ অফিসার সামান্য আহত হয়েছেন।
কংগ্রেসের অধিবেশন চলাকালে হোয়াইট হাউজের সামনে র্যালিতে জড়ো হন হাজার হাজার ট্রাম্প সমর্থক। সেই সমাবেশের বক্তব্যে নভেম্বরের নির্বাচনে পরাজয় মেনে না নেওয়ার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমরা কখনোই হাল ছাড়ব না, আমরা কখনোই পরাজয় স্বীকার করব না। আমরা জালিয়াতি রুখে দেব।’ এরপই ট্রাম্প সমর্থকরা পার্লামেন্ট ভবনের ভেতরে ঢুকে সন্ত্রাসীরা কর্মকাণ্ড শুরু করে।