পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন দুয়ারে, কাল বাদে পরশু থেকেই আট পর্বের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হবে। তার আগে শেষ মুহূর্তে প্রচারে ঝালাই করে নিচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিজেপি প্রার্থীদের হয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতকাল বুধবার মোদি পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম দুই নির্বাচনী অঞ্চলে সমাবেশ করেন। এদিকে মমতা তিনটি র্যালিতে অংশ নেন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা।
নরেন্দ্র মোদি প্রথমে সভা করেন পশ্চিমবঙ্গের কাঁথিতে। সেখানে মমতাকে সরাসরি আক্রমণ করেন। ভোটের আগে তৃণমূল প্রচারে নেমেছিল ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি নিয়েছে। সেটিকে উল্লেখ করে গতকাল মোদি বলেন, মানুষের প্রয়োজনে আপনাকে পাশে পাওয়া যায় না। আর ভোটের সময় দুয়ারে সরকার করছেন। এর পর মোদি বলেন, মানুষই মমতাকে ‘দরজা’ দেখিয়ে দেবে। ত্রাণ তছরুপের অভিযোগ তুলে মোদি বলেন, আম্পানে যাদের ঘরবাড়ি শেষ হয়েছিল, দিদি এখনো তাদের কাছে জবাব দিতে পারেননি। কেন্দ্রীয় সরকার যে অনুদান দিয়েছিল তাও ভাইপো (মমতার ভাতিজা অভিষেক ব্যানার্জি) নাশ করেছেন। তাই সাধারণ কিছুই পায়নি।
নরেন্দ্র মোদির প্রতিটি কথার কড়া জবাব দিয়েছেন মমতা। গতকাল বাঁকুড়ায় তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন তিনি। মমতা সরাসরি বলেন, মোদির মতো এত বড় মিথ্যাবাদী আমি আর দেখিনি। প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারটাকে সম্মান করতাম কিন্তু এখন করি না। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে থেকে এসে মোদি-অমিত শাহরা দাপট দেখাচ্ছেন বলে মমতা তাদের ‘বহিরাগত’ বলে কটাক্ষ করেছেন। এর জবাবে মোদি গতকাল বলেন, আমরা সবাই ভারত মায়ের সন্তান। কেউ বহিরাগত নয়। পাল্টা জবাবে মমতা বলেন, ভারতের অন্য প্রদেশ থেকে কেউ এলে বহিরাগত বলি না; কিন্তু শুধু ভোটের আগে এলে তাদের বহিরাগত বলি!
এদিকে গতকাল পর্যন্ত ভোটের জরিপে এগিয়ে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবিপি লাইভ জনমত জরিপে দেখা গেছে- পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ৫৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী মমতাকেই দেখতে চান। এর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি দিলীপ ঘোষ, যার পক্ষে সমর্থন রয়েছে ৩২ শতাংশ। এ ছাড়া জরিপে দেখা যায়, তৃণমূল পাবে ১৬০ আসন, যা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়ে বেশি আর বিজেপি পাবে ১১২ আসন।
পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি আসাম, তামিলনাড়–, কেরালা ও পদুচেরিতেও একই সঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। গতকাল মোদি আসামে প্রচারে গিয়ে বলেন, কংগ্রেস যে মহাজোট করেছে সেটি আসলে ‘মহাজোট নয়’- ‘মজাঝোট’। এ ছাড়া কংগ্রেসের দুর্নীতি নিয়ে তুলাধোনা করেন মোদি। এপিবি জরিপে দেখা যায়, ২০১৬ সালের চেয়ে আরও আটটি আসন খোয়াবে কংগ্রেস। সেগুলো যাবে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের পকেটে।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে আট পর্বের নির্বাচন শুরু হবে ২৭ মার্চ। শেষ হবে ২৯ এপ্রিল আর ফল ঘোষণা হবে ২ মে।