সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের ব্যর্থতা, অযোগ্যতা, দমন-নিপীড়ন, গণতন্ত্র ও গণবিরোধী কার্যকলাপ এবং ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী, এমপি ও নেতা-কর্মীদের দুর্নীতি, লুটপাট, অনৈতিকতা, অনিয়ম, বেপরোয়া আচরণের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখা-লেখির জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে লেখক, সাংবাদিক, কবি, কার্টুনিস্ট, মানবাধিকার ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদেরকে গ্রেফতার ও তাদের ওপর ধারাবাহিক নিষ্ঠুর জুলুম চলছে। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক অধিকার খর্বের পর এখন এই কালো আইন ব্যবহার করা হচ্ছে, যাতে মানুষ নিজেদের কষ্ট ও ক্ষোভ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ব্যক্ত করতে না পারে।
শুক্রবার বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতরের দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, যারা স্বাধীনভাবে গণমাধ্যমে নিজের মতপ্রকাশের চেষ্টা করছে কিংবা বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী আন্দোলনে অংশ নিচ্ছে তাদের জীবনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নিষ্ঠুর কালাকানুনের দ্বারা নেমে আসছে ভয়ঙ্কর দুর্বিষহ পরিণতি। এরই ধারাবাহিকতায় খুলনার নির্বাচনে মেয়র ও তার স্বজনদের দুর্নীতি, অনৈতিক ও বেআইনি অপকর্মের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জন্য খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি, এনটিভি’র ব্যুরো প্রধান ও মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক আবু তৈয়ব মুন্সীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও সাজানো মামলা দায়ের, গ্রেফতার ও তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ফেনী জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী হাবিবুল্লাহ মানিক, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দোলন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালাউদ্দিন মামুন, যুগ্ম সম্পাদক কাজী নজরুল ইসলাম দুলাল, ছাত্রদল কর্মী এমরানুল হক এবং নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল করিম পাটোয়ারী মিন্টুর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। যুবদল নেতা আব্দুল করিম পাটোয়ারী মিন্টু এবং ফেনীর ছাগলনাইয়া পৌর বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক কমিশনার জয়নাল আবেদীন ফারুককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া ফেনীর ছাত্রদল কর্মী এমরানুল হকের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। সরকার কর্তৃক এসব ন্যাক্কারজনক ঘটনা চলমান ভয়াবহ দুঃশাসনের খণ্ড চিত্র মাত্র।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, জনগণকে বন্দী রেখে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো নিবর্তনমূলক কালো আইন ব্যবহারের মাধ্যমে দমন-নিপীড়ন চালাচ্ছে। বর্তমান সরকার জনগণের সরকার নয় বলেই সামান্যতম সমালোচনাও সহ্য করতে পারছে না। এই কালো আইনের মাধ্যমে জনগণের বাকস্বাধীনতা, লেখার স্বাধীনতা, মুক্তচিন্তার স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছে। জনরোষ থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে এই আইনটি ব্যবহার করা হচ্ছে।
এ সময় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা প্রত্যাহার ও হয়রানি বন্ধসহ নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের জোর দাবি জানান মির্জা ফখরুল।