যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় অটোমানদের হাতে বিপুলসংখ্যক আর্মেনীয়র মৃত্যুর ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি শিগগির এ স্বীকৃতি দেওয়ার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। দুই নেতার কথোপকথন বিষয়ে অবগত বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে রয়টার্স। ওয়াশিংটনের এ আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি ন্যাটো মিত্র দুই দেশের সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটাবে বলেই পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার তিন মাসেরও বেশি সময় পর বাইডেন গত শুক্রবার প্রথম টেলিফোনে এরদোগানের সঙ্গে কথা বলেছেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা তুর্কি প্রেসিডেন্টের অনাগ্রহের কারণেই দুই নেতার মধ্যে আলাপে এত দেরি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র এতদিন অটোমানদের ১৯১৫ সালের হত্যাযজ্ঞকে ‘ভয়াবহ খারাপ অপরাধ’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে এসেছে। ন্যাটো মিত্র তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঠেকাতেই তারা এমনটা বলত বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে থেকেই বাইডেন আর্মেনীয় ‘গণহত্যা’র স্বীকৃতি নিয়ে সরব ছিলেন। ২০১৯ সালের অক্টোবরে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে ওই ‘গণহত্যা’কে স্বীকৃতি দিতে ওঠা একটি বিল ৪০৫-১১ ভোটে গৃহীত হলে সে সময় ডেমোক্র্যাট দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী বাইডেন তাকে স্বাগত জানান।
তবে রয়টার্স বলছে, শুক্রবার দুই নেতার ফোনালাপ নিয়ে দেওয়া হোয়াইট হাউস ও তুর্কি প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের কোনো বিবৃতিতেই আর্মেনীয় ‘গণহত্যার স্বীকৃতি’ প্রসঙ্গটি স্থান পায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রকে অগ্রাহ্য করে তুরস্কের রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনা এস-৪০০ ক্রয়, সিরিয়া, মানবাধিকারসহ নানান ইস্যুতে ওয়াশিংটন ও আঙ্কারার মধ্যে বিরোধ চলছে। আর্মেনীয় ‘গণহত্যা’র স্বীকৃতি ওই বিরোধ আরও তীব্র করবে বলেই আশঙ্কা অনেকের।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তুর্কি অটোমানরা আনাতোলিয়ার পূর্ব অংশ থেকে সিরিয়ার মরুভূমি ও আশপাশের এলাকাগুলোয় বিপুল পরিমাণ আর্মেনীয়কে নির্বাসনে পাঠিয়েছিল। যার দরুন কয়েক লাখ লোক বিভিন্ন রোগে ভুগে ও অনাহারে মারা পড়েছিলেন বলে ইতিহাসবিদদের ধারণা।