মুসলিম মানেই সন্ত্রাসবাদ। একই সাথে এশিয়ান বংশোদ্ভুত ও মহিলাদের প্রতি অবমাননাকর মন্তব্য করে আগেই সংবাদের শিরোনামে চলে এসেছিলেন ইংল্যান্ডের প্রতিভাবান ক্রিকেটার অলি রবিনসন। ন্যক্কারজনক এই মন্তব্যের জন্য পরবর্তী সময়ে ক্ষমা চেয়ে নেন তিনি। কিন্তু তাতেও মন গলেনি ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি)। প্রায় ৮ বছর আগে করা বর্ণবিদ্বেষী টু্যইটের জন্য রবিনসনকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করেছে ইসিবি। এর ফলে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে চলতি সিরিজের পরের ম্যাচটি খেলা হবে না তার। তবে এই সিদ্ধান্ত সার্বিকভাবে ক্রিকেটের জন্য কল্যাণকর হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অভিষেক– নিজের প্রথম ম্যাচেই বল হাতে ৭ উইকেটের পাশাপাশি দলকে উদ্ধার করা ৪২ রান– কেরিয়ারের প্রথম টেস্ট খেলতে নামা একজন খেলোয়াড়ের জন্য উদ্ভাসিত পারফরম্যান্সই বটে। কিন্তু এই পারফরম্যান্স করেও উচ্ছ্বাসের সুযোগ নেই ইংল্যান্ডের পেসার রবিনসনের। কারণ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চলতি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে খেলা হবে না ২৭ বছর বয়সী এ পেসারের।
এক বিবৃতিতে অলির শাস্তির কথা জানিয়েছেন ইসিবির প্রধান নির্বাহী টম হ্যারিসন। সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে– ‘ইংল্যান্ড ও সাসেক্সের বোলার অলি রবিনসনকে সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তার ২০১২ ও ২০১৩ সালে করা টু্ইটগুলোর বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করা হবে এবং সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে নেয়া হবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত।’
রবিনসনের এই শাস্তির মূলে রয়েছে ৮ বছর আগে সোশ্যাল মিডিয়া করা একাধিক বিতর্কিত পোস্ট। প্রচারের আলো থেকে বেশ দূরে থাকা তরুণ রবিনসন নিজের টু্যইটার অ্যাকাউন্টে মুসলিমবিদ্বেষী এবং মহিলাদের নিয়ে বেশ কিছু লিঙ্গ বৈষম্যমূলক মন্তব্য করেছিলেন। ৮ বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পা রাখতেই হঠাৎ করে তার সেই বিতর্কিত পোস্টগুলো সামনে চলে আসে। ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত করা তার পোস্টগুলো শুধু সামনে আসাই নয়– পুরোদস্তুর ভাইরাল হয়েছে।
অলির মন্তব্যের মধ্যে ছিল মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ। তাদেরকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিত্রায়িত করা– মহিলাদের নিয়ে চরম অবমাননাকর কথাবার্তা এবং এশিয়ান ঐতিহ্য নিয়ে নানা ধরনের কটাক্ষমূলক কথাবার্তা। রবিনসনের বয়স ছিল তখন ১৮-১৯। ওই সময় তিনি লেস্টারশায়ার– কেন্ট ও ইয়র্কশায়ারের দ্বিতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে খেলতেন। তীব্র বিতর্কের মাঝে প্রথম দিনের খেলা শেষে ক্ষমা চাইতেও বাধ্য হলেন ২৭ বছর বয়সী এই বোলার। তিনি বলেছিলেন– ‘আমি নিজের এমন মন্তব্যের জন্য খুবই লজ্জিত। আমার পরিস্থিতি তখন যেমনই হোক– বিচার-বিবেচনা না করে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যের কোনো ব্যাখা হয় না। আমি নিজের ভুলের জন্য লজ্জিত। আমার কথায় আঘাতপ্রাপ্ত সবার কাছে আমি ক্ষমা চাইছি।’
সূত্র : পুবের কলম