বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:২২ অপরাহ্ন

লিবিয়ার ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী শত শত বাংলাদেশী

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২১ জুন, ২০২১
  • ১৩৯ বার

যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়ার ডিটেনশন ক্যাম্পগুলোতে শত শত বাংলাদেশী বন্দী অবস্থায় অনেকটা মানবেতর দিন যাপন করছেন। ইউরোপের দেশ ইতালিতে পাড়ি জমানোর স্বপ্ন দেখা এসব বাংলাদেশী মূলত সাগর পাড়ি দেয়ার সময় দেশটির আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকতে থাকতে অনেকেই শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। দূতাবাসের সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মাধ্যমে মাঝে মধ্যে অনেকে মুক্তির পর দেশে ফেরত আসছেন।

সম্প্রতি গাদামেস শহরের নিকটবর্তী একটি ডিটেনশন সেন্টারে আটক বাংলাদেশীদের সর্বশেষ অবস্থা সরেজমিন দেখতে যায় লিবিয়ার ত্রিপোলিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলরের (শ্রম) নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। এ সময় দূতাবাসের পক্ষ থেকে আটক বাংলাদেশীদের কাউন্সেলিং করা হয়।

লিবিয়ার ত্রিপোলি দূতাবাস ও স্থানীয় বাংলাদেশী কমিউনিটি-সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়ার জীবনযাত্রা এখনো অস্বাভাবিক অবস্থার মধ্যেই রয়েছে। দেশটির পূর্বাঞ্চল শহরটি এখনো হাফতার খলিফা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অন্য দিকে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিসহ পশ্চিমাঞ্চল জাতিসঙ্ঘ কর্তৃক লিবিয়ানদের নিয়ে গঠিত সরকার দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।

তারা বলছেন, ২০১৫ সাল থেকে লিবিয়ায় বৈধভাবে বাংলাদেশী শ্রমিক আসার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ঢাকা থেকে প্রতিনিয়ত বডি কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে ভিজিট ভিসায় দুবাই, এরপর তিউনেশিয়া হয়ে লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল বেনগাজি আসছে। কিছু দিন অবস্থান করার পর সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ত্রিপোলি হয়ে স্বপ্নের ইউরোপের পথে পাড়ি জমাতে তাদেরকে সাগরপথে ট্রলারে তুলে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিছু লোক যেতে পারলেও পথ্যে অনেকে ধরা পড়ছে। এসব মানুষের শেষমেশ ঠাঁই হয় ডিটেনশন ক্যাম্পে। আবার অনেকে মাফিয়া গ্রুপের হাতে আটক হয়।

সেখানেও তারা নির্যাতিত হয়। একপর্যায়ে তাদেরকে মুক্ত করাতে দেশ থেকে স্বজনদের মুক্তিপণের টাকা পাঠাতে হয়। সর্বশেষ লিবিয়ার গ্যাংস্টার বাহিনীর হাতে মিশকাতে আটক হওয়ার পর একজন লিবিয়ানকে গুলি করে খুন করার ঘটনার জের ধরে ২৬ বাংলাদেশীসহ মোট ৩০ জনকে ব্রাশফায়ারে হত্যা করা হয়। লিবিয়ার এই ঘটনা সারা বিশ্বে তোলপাড় হয়। তার পরও থামেনি অবৈধ পথে দেশ থেকে মানবপাচারের ঘটনা। লিবিয়ার বেনগাজির চি?িহ্নত দালালরা এখনো বাংলাদেশ থেকে বডি কন্ট্রাক্টে লোক এনে ইতালিতে পাঠানোর ধান্ধা চালাচ্ছে; তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে গোলাম কিবরিয়া হেলাল, ওমর ফারুক, সাবিত আলম তুষার, মাহবুব পাঠান, ফয়সাল, খোরশেদ আলম, খোরশেদ খান, মোস্তফা ও মো: শাকিল খান। এদের কর্মকা সম্পর্কে ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাস অবহিত রয়েছে বলে জানা গেছে।

লিবিয়ার স্থানীয় কমিউনিটি-সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করছেন, ডিটেনশন ক্যাম্পে বাংলাদেশীরা শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ। ক্যাম্প থেকে মুক্তি পেতে তাদেরকে মাথাপিছু দুই লাখ টাকা করে দিতে হয়। নতুবা বন্দিদশা থেকে মুক্তি মেলে না।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com