সাধারণত ফুটবল মাঠে বিভিন্ন খুঁটিনাটি ঘটনার কারণে সময়ের যে অপচয় হয় তা পুষিয়ে নিতে দুই অর্ধের শেষেই অতিরিক্ত মিনিট যোগ করা হয়ে থাকে। এটা এক মিনিট থেকে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত হয়ে থাকলেও কোপা আমেরিকায় ব্রাজিল-কলম্বিয়ার ম্যাচে ১০ মিনিট দিতে দেখা গেছে। রেফারির এমন কাণ্ডে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কে বয়ে চলছে। যদিও ম্যাচের মাঝে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় অনেকখানি সময় কেটে যায়, যার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেয় ম্যাচ রেফারি।
ম্যাচের শুরুতে লুইস দিয়াসের গোলে পিছিয়ে পড়ে ব্রাজিল। এরপর একের পর এক আক্রমণ করেও প্রতিপক্ষের জালে বল জড়াতে পারেনি স্বাগতিকরা। আসরের প্রথম দুই ম্যাচে সাত গোল করেও নিজেদের জাল অক্ষত রাখা ব্রাজিল এই ম্যাচে এসে পিছিয়ে পড়ে। টানা আট ম্যাচ পর ব্রাজিলের পিছিয়ে পড়াটা দলটির জন্য মানসিকভাবে শক্ত থাকাও জরুরি ছিল বটে।
আক্রমণের কমতি ছিল না ব্রাজিলের। ম্যাচের ৭৮তম মিনিটে এসে রর্বেত ফিরমিনোর হেডে সমতায় ফেরে ব্রাজিল। কিন্তু গোলটি নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। আক্রমণের শুরুতে নেইমারের শট রেফারির গায়ে লাগলে কলম্বিয়ান খেলোয়াড়েরা নিজেদের কয়েক মুহূর্তের জন্য থামিয়ে দিয়েছিলেন। তারা মনে করেছিলেন রেফারি বুঝি খেলা থামিয়ে দেবেন। তবে খেলা চালিয়ে যাওয়ারই ইঙ্গিত দেন রেফারি।
তখন ব্রাজিলের লুকাস পাকেতা বল নিয়ে বাড়ান রেনান লোদিকে। তার ক্রসেই হেড থেকে গোল করেন ফিরমিনো। হেডটি ঠেকানোর সুযোগ থাকলেও কেন জানি তা পারেননি কলম্বিয়ান গোলরক্ষক। গোলের বাঁশি বাজলে প্রতিবাদ করে কলম্বিয়া। নানা তর্ক-বিতর্কের কারণে অনেকখানি সময় কেটে যায়। সময়ের কথা বার বার রেফারিকে জানান দেয় ব্রাজিল। মাঠে সময়ের অপচয় পুষিয়ে দিতেই শেষে যোগ সময় দশ মিনিট দেওয়া হয়। যা কাল হয় কলম্বিয়ার জন্য, ব্রাজিলের জন্য হয় আশীর্বাদ।
যোগ করা সময়ের ঠিক শেষ সময়ে আন-মার্কে থেকেই দারুণ হেডে বল জালে জড়ান ক্যাসেমিরো। নেইমারের নেওয়া কর্নার থেকে সরাসরি হেডে বল জালে পাঠান ব্রাজিলিয়ান অধিনায়ক। তাতেই কপাল পুড়েছে কলম্বিয়ার। হেরে মাঠ ছাড়ে তারা। তবে দলটির কোচ রেনালদো রুয়েদা ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘ব্রাজিলের দুটি গোল এসেছে পুরোপুরি ভিন্ন অবস্থায়। প্রথম গোলটিতে রেফারির গায়ে বল লাগায় আমার দলের খেলোয়াড়েরা পুরোপুরি বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে।’
তবে এমন জয়কে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দেখছেন ব্রাজিল অধিনায়ক ক্যাসেমিরো। তিনি বলেন, ‘কৃতিত্ব ব্রাজিলেরই প্রাপ্য। কারণ আমরা দারুণ মানসিক শক্তির প্রমাণ রেখেছি, খেলার নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছিলাম এবং শেষ পর্যন্ত ফল পেয়েছি, কারণ মাথা ঠাণ্ডা রেখে গোলের চেষ্টা করে গেছি আমরা। এই ধরনের মানসিকতাই থাকা উচিত।’