যুক্তরাষ্ট্রে সপ্তাহব্যাপী রোড শো শুরু হচ্ছে নিউ ইয়র্ক থেকে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের উদ্যোগে স্থানীয় সময় সোমবার সকালে নিউ ইয়র্ক সিটির কেন্দ্রস্থল ম্যানহাটনে শুরু হতে যাচ্ছে প্রথমদিনের কর্মসূচি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের শেয়ারবাজারের ব্যাপ্তি ও প্রবাসী বাংলাদেশি এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এই উদ্যোগ নিয়েছে।
এই রোড শো-তে শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি, বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা এবং উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ব্যাপকতা তুলে ধরা হবে। এই আয়োজনের সব প্রস্তুতি রোববার সন্ধ্যায় সম্পন্ন হয়েছে। ম্যানহাটনের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল বার্কলের বলরুমে হবে মূল অনুষ্ঠান। বলরুম ঘিরে থাকছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের স্টল ও ডিসপ্লে সেন্টার এবং মিটিং রুম।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে এই রোড শোর আয়োজন করা হয়েছে। এ আয়োজনের অন্যতম স্পন্সর বাংলাদেশি মাল্টিন্যাশনাল ব্র্যান্ড ওয়ালটন। এরই মধ্যে রোড শোর মূল আকর্ষণ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশি টেক জায়ান্ট ওয়ালটন। বড় পর্দার ডিসপ্লে স্ক্রিন, এক্স স্ট্যান্ড, ব্যানার ইত্যাদি দিয়ে সাজানো হয়েছে ওয়ালটন ডিসপ্লে সেন্টার। রয়েছে বিনিয়োগকারীদের জন্য মিটিং স্পেস। ভিডিও স্ক্রিনে ওয়ালটনের উৎপাদন ও মার্কেটিং এর ওপর নির্মিত ডিজিটাল ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হবে। আগ্রহীদের ওয়ালটন সম্পর্কে ধারণা দিতে থাকছেন দক্ষ কয়েকজন কর্মকর্তা। তারা বিনিয়োগকারী এবং দর্শনার্থীদের ওয়ালটনের ভিশন এবং মিশন সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেবেন।
বিশ্ব বাজারে নিজেদের জায়গা করার লক্ষ্যে ওয়ালটন এই রোড শোকে গুরুত্ব দিচ্ছে। এই রোড শোকে কেন্দ্র করে ওয়ালটনের দশ সদস্যের উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিদল এখন নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছে। প্রতিনিধিদলে রয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম, ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ, পরিচালক তাহমিনা আফরোজ তান্না, নিশাত তাসনিম শুচি, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল বাশার হাওলাদার, চিফ মার্কেটিং অফিসার ফিরোজ আলম, ওয়ালটন টেলিভিশনের প্রধান বিজনেস অফিসার প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন, ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শেখ মহিউদ্দিন আল ফারুক প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলাম, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. নজরুল ইসলামসহ সরকারি-বেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন।
সম্মেলনে অংশ নিতে ঢাকা থেকে বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও এসেছেন। রোড শোর মূল শিরোনাম দি রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: পটেনশিয়ালস ইন ট্রেন্ড অ্যান্ড ইনভেষ্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ। এই রোড শো যুক্তরাষ্ট্রের ৪ শহরে ২৬ জুলাই থেকে ২ আগষ্ট পর্যন্ত চলবে।
এই অনুষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন পর্বে পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক বিভিন্ন বিষয়কে ফোকাস করা হয়েছে। রোড শোর প্রথমদিন সোমবার থাকছে দুটি পর্ব। যুক্তরাষ্ট্রের সময় অনুযায়ী সকাল সাড়ে ৯টায় প্রথম পর্ব শুরু হবে। যেখানে অংশ নেবেন অনাবাসি বাংলাদেশিরা। এ পর্ব চলবে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। দুপুর আড়াইটায় শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। সেই পর্বে অংশ নেবেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা।
২৮ জুলাই দ্বিতীয় রোড শো হবে ওয়াশিংটন ডিসিতে। তৃতীয়টি ৩০ জুলাই লস এঞ্জেলেসে। চতুর্থ রোডশো’ অনুষ্ঠিত হবে সিলিকন ভ্যালি সান ফ্রান্সিসকোতে, ২ আগস্ট।
এই রোড শোকে কেন্দ্র করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মনোযোগ এবং আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে এখন ওয়ালটন। অল্প কয়েকদিনের মধ্যে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে এসেই বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে দেশের শীর্ষ ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য উৎপাদন এবং বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। লভ্যাংশ, বিশ্বমানের পণ্য, রপ্তানি এবং মান সম্পন্ন সেবা দিয়ে বাংলাদেশের টেক জায়ান্ট ওয়ালটন অতি অল্প সময়ের মধ্যে সবার আস্থা অর্জন করেছে।
ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ এই রোড শো প্রসঙ্গে বলেন, ওয়ালটনের লক্ষ্য এখন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ব্র্যান্ড হওয়া। গ্লোবাল ব্র্যান্ড হতে হলে দেশের বাইরে গিয়ে বিশ্বকে জানান দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এসেছে। তারা দেখবেন এখানে কি কি সম্ভাবনা আছে। তাদের রিপোর্ট এবং অবজারভেশনের ওপর ভিত্তি করে ওয়ালটন তার গ্লোবাল রোড ম্যাপ তৈরি করবে।