হেরেও জয়ের সুখ পেতে চেয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষমতায় থেকে যেতে জো বাইডেনের কাছে পরাজয় অস্বীকারে অনড় এ রিপাবলিকান সাধ্যমতো সবকিছুই করেছিলেন। এখন এমন একটি নথি প্রকাশ হয়েছে, যেখানে তার নতুন এক ষড়যন্ত্রের কথা জানা গেছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগকে বলেছিলেন, ‘শুধু বলো, নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে, বাকিটা আমি দেখব।’ দ্য গার্ডিয়ান গতকাল এক প্রতিবেদনে বলেছে, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মার্কিন বিচার মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের এ অনুরোধ জানিয়েছিলেন গত ডিসেম্বরে টেলিফোনের মাধ্যমে।
২৭ ডিসেম্বর ট্রাম্পের সঙ্গে সেই ফোনকলে অংশ নেওয়া কয়েকজন ব্যক্তির মধ্যে একজন হাতে লেখা একটি চিরকুট লিখেছিলেন। শুক্রবার ওই ফোনকলের চিরকুটটি প্রকাশ করে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের হাউস ওভারসাইট কমিটি।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের এ কমিটি জোর দিয়ে বলছে, গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল উল্টে দিতে ট্রাম্প কতটা মরিয়া হয়ে চেষ্টা করেছেন, তা এ ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদেরও নিজের এ প্রচেষ্টায় শামিল করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প।
গত মাসে প্রকাশ্যে আনা বেশ কয়েকটি ই-মেইলে দেখা যাচ্ছে যে- ২০২০ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ‘ব্যাপক দুর্নীতির’ সন্ধানে তদন্ত শুরু করতে ক্ষমতার শেষ সপ্তাহগুলোতে মার্কিন বিচার মন্ত্রণালয়কে চাপ দিয়েছিলেন ট্রাম্প ও তার ঘনিষ্ঠজনরা। একই সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নির্বাচনের ফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কি না সে বিষয়েও তদন্ত করেছিলেন ওই দপ্তরের ইন্সপেক্টর জেনারেল।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ্রে রোজেনের সঙ্গে এ ফোনকলের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন দেশটির বিচার মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রিচার্ড ডনোগউ। ট্রাম্প-রোজেনের কথোপকথনের কিছু অংশ নিয়ে সে সময় একটি চিরকুট (পিডিএফ) লিখেছিলেন ডনোগউ।
এ চিরকুটের তথ্য অনুযায়ী, ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ্রে রোজেন টেলিফোনে ট্রাম্পকে জানান, ‘বিচার মন্ত্রণালয় (ডিওজে) নির্বাচনের ফল পরিবর্তন করতে পারে না। একই সঙ্গে নির্বাচনের ফলের দিকে আঙুলও তুলবে না ডিওজে।’
জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনি এটা করবেন বলে (আমিও) আশা করি না। আপনারা শুধু এই ঘোষণা দেন যে- নির্বাচনে দুর্নীতি হয়েছে এবং বাকিটা আমার ও রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্যদের ওপরে ছেড়ে দেন।’
ট্রাম্প এ সময় নির্বাচনে ‘জালিয়াতি ও কারচুপির’ নিয়ে ‘বৈধ অভিযোগগুলোর’ বিষয়ে তদন্ত শুরু করতেও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছিলেন।
ডনোগউয়ের চিরকুটের তথ্য অনুযায়ী, রোজেন এ সময় ট্রাম্পকে বলেন, ‘স্যার, আমরা কয়েকডজন তদন্ত করেছি, শত শত মানুষের কথা শুনেছি। কিন্তু (আপনাদের পক্ষ থেকে) সামনে আনা প্রমাণগুলো বড় কোনো অভিযোগকেই সমর্থন করছে না।’