বর্তমান বিশ্বের সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি। বার্সা ছাড়ার ঘোষণার পর তাকে দলে বেড়াতে আগ্রহী ক্লাবের তালিকায় পিএসজি থেকে শুরু করে ম্যানচেস্টার সিটি, ইন্টার মিলান, জুভেন্টাস, ইন্টার মায়ামি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, লিভারপুল ও চেলসিসহ ছিল সব বড় ক্লাবের নাম। বিভিন্ন কারণে যে তালিকা কমতে কমতে ক্লাবের সংখ্যা দাঁড়ায় দুইয়ে, ম্যানচেস্টার সিটি ও পিএসজি। শুক্রবার পেপ গার্দিওলার বক্তব্যের মাধ্যমে পরিষ্কার হয়ে যায়, জ্যাক গ্রিলিশকে আগেই দলে নিয়ে নেয়ায় সিটিও আর লিওনেল মেসির দিকে হাত বাড়াতে পারছে না।
রইল বাকি পিএসজি। মেসি সেই পিএসজিতেই যাচ্ছেন। অন্তত ফ্রান্স, স্পেন ও আর্জেন্টিনার নির্ভরযোগ্য ক্রীড়াসাংবাদিক ও গণমাধ্যমের খবর এটাই।
বার্সেলোনায় আর মেসি খেলবেন না, এই খবর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হওয়ার পর মূলত পিএসজিই মেসিকে দলে নেয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগে। সে প্রচেষ্টায় তারা শতভাগ সফল হয়েছে, এমনটাই খবর নির্ভরযোগ্য গণমাধ্যমগুলোর।
ফরাসি সংবাদমাধ্যম লে’ কিপ জানিয়েছে, পিএসজিতে যাওয়ার ব্যাপারে এর মধ্যেই বন্ধু নেইমার ও আনহেল দি মারিয়ার সাথে নিয়মিত কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছেন মেসি। কথা বলেছেন পিএসজির আর্জেন্টাইন কোচ মরিসিও পচেত্তিনোর সাথে। বুঝে নিচ্ছেন নিজের সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ ক্লাবের ভেতর-বাইরের অবস্থা। নেইমার নিজে খুব করে চাইছেন প্রিয় সতীর্থ মেসি যেন পিএসজিতে আসেন।
এদিকে পিএসজিও হাত গুটিয়ে বসে নেই। দলবদল বিষয়ে ফরাসি সাংবাদিক মুহামেদ বুহাফসি জানিয়েছেন, নিজের পরবর্তী ক্লাব হিসেবে পিএসজিকে বেছে নিয়েছেন মেসি। পিএসজির সাথে মেসির চুক্তিটা কেমন হবে, সেটারও একটা ধারণা দিয়েছেন এই সাংবাদিক। আপাতত দুই বছরের চুক্তি, আরো এক বছর বাড়ানোর সুযোগ থাকবে চুক্তিতে। পিএসজি চাইছে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই মেসির গায়ে নিজেদের জার্সি পরাতে।
মেসির বাবা ও মুখপাত্র হোর্হে মেসির সাথে এর মধ্যেই আলোচনা করে ফেলেছে পিএসজি। আগামী বছর কাতারে বিশ্বকাপ, গুরুত্বপূর্ণ ওই ইভেন্টের আগে মেসির মাপের একজন ফুটবলার কাতারি মালিকানাধীন ক্লাবে এলে কাতারের আকর্ষণ যে আরো কয়েক গুণ বেড়ে যাবে, সেটা বেশ ভালোমতোই জানে ক্লাবটা।
তবে মেসির সাথে সম্ভাব্য চুক্তির দৌড়ে পিএসজি যতই এগিয়ে থাকুক, বেশ ভালোই কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে দলটাকে। ফ্রান্সে আয়কর আইনের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য আকাশছোঁয়া বেতন দিতে হচ্ছে আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে। কর-টর কেটে নেয়ার পর পিএসজি মেসিকে বছরে নেট চার কোটি ইউরো বেতন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ কর বাবদও একই পরিমাণ অর্থ দিতে হবে তাদের, সব মিলিয়ে বাৎসরিক আট কোটি ইউরোর ধাক্কা। ফিন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লের বেড়াজাল এড়িয়ে এই বেতনে মেসিকে দলে রাখার জন্য আদর্শ উপায় খুঁজে বের করেছে পিএসজি।
মেসিকে পেতে পিএসজির আগ্রহ অনেক দিনের। কাতারি মালিকানাধীন হওয়ার পর থেকেই চেষ্টা করে গেছে ক্লাবটা, কিন্তু মেসি কখনো বার্সেলোনা ছাড়তে চাননি বলে দৌড়ে এগোতে পারেনি পিএসজি। গত মৌসুমে জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউর বোর্ডের ওপর বিরক্ত হয়ে মেসি যখন ক্লাব ছাড়ার অনুমতি চেয়ে বার্সায় বুরোফ্যাক্স পাঠান, তখন পিএসজি নড়েচড়ে বসেছিল। কিন্তু সে যাত্রায় আইনের মারপ্যাঁচে বার্সা ছাড়া হয়নি মেসির।
আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম টিএনটি স্পোর্ত জানিয়েছে, আগামী শুক্রবার বা শনিবার পিএসজির কর্তাব্যক্তিদের সাথে সরাসরি আলোচনা করার জন্য নিজস্ব উড়োজাহাজে করে ফ্রান্সের নিসে যাবেন মেসি। গুঞ্জন উঠেছে, মেসি পিএসজিতে এসেছেন, এই ঘোষণাটা রাজকীয়ভাবে দেয়ার জন্য ১০ আগস্টের জন্য প্যারিসের বিখ্যাত আইফেল টাওয়ার ভাড়া নিয়ে রেখেছে পিএসজি।