খালেদা জিয়ার জন্মদিন সম্পর্কে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য ‘অরাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বিবর্জিত’ বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ সোমবার খালেদা জিয়ার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে তার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া ও মাহফিলের আগে তিনি এই প্রতিক্রিয়া জানান।
রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির উদ্যোগে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে তার আরোগ্য, দীর্ঘায়ু ও মুক্তি কামনায় এবং সারা দেশে করোনাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারীদের আত্মার মাগফেরাতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হয়।
মাহফিলের আগে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা তো এখানে সবাই দেশনেত্রীর দীর্ঘায়ু, সুস্বাস্থ্য কামনা করার জন্য উপস্থিত হয়েছি মিলাদের মাধ্যমে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এদেশের গণতন্ত্রের সঙ্গে একটা অবিচ্ছেদ্য নাম, গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করবার জন্য তার যে সংগ্রাম সেই সংগ্রাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। আজকেও এই মুহুর্তে তিনি সেই সংগ্রামই করে চলেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের যে অবৈধ সরকার আওয়ামী লীগ, যেটা আমাদের বুকের উপর চেপে বসে আছে তার সাধারণ সম্পাদক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন সম্পর্কে একেবারে অরাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বিবর্জিত কথা বলেছেন। আমি তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
খালেদা জিয়ার প্রতি সরকারের প্রতিহিংসামূলক আচরণের সমালোচনা করে মির্ঝা ফখরুল বলেন, ‘এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে একটা মিথ্যা মামলায় যেটা ১/১১ অবৈধ সরকারের আমলে দায়ের করা হয়েছিল, সেই মামলায় সাজা দিয়ে তাকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে শুধুমাত্র জনগণ থেকে দূরে রাখার জন্য, রাজনীতি থেকে দূরে রাখার জন্য তাকে অন্তরীণ করে রেখেছে। আমরা দেখেছি কী নিদারুণ যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে তিনি প্রায় তিন বছর এই অন্তরীণ একটা অবস্থা তিনি অতিক্রম করছেন এবং এর মধ্যে তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে অত্যন্ত গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সেই সময়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে বলা হয়েছিল তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেওয়ার। সেটাও সরকার তাকে যেতে দেননি।’
‘এর উদ্দেশ্য হচ্ছে যে, জনগণের নেত্রীকে জনগণের সামনে আসতে না দেওয়া এবং তিনি যেন রাজনীতিতে সক্রিয় হতে না পারেন সেজন্য ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত তারা করছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ব্যর্থ হবে। তিনি আবার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই যে ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট দানবীয় শক্তি দেশের মানুষের উপর চেপে বসে আছে তাদেরকে পরাজিত করতে তিনিই নেতৃত্ব দেবেন,’ যোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
পরে খালেদা জিয়ার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনার বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এই মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে নয়াপল্টনের নিচ তলার কক্ষে এবং ফুটপাতে কয়েক’শ নেতাকর্মী উপস্থিত হয়। দোয়া মাহফিলের পর নেতাকর্মীদের ‘শুভ শুভ শুভদিন খালেদা জিয়ার জন্মদিন, দেশনেত্রীকে শুভেচ্ছা- স্বাগতম’ ইত্যাদি স্লোগানও দিতে দেখা যায়।
কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে দলের স্থায়ী কমিটির গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান ও আবদুস সালাম বক্তব্য রাখেন।
এ ছাড়াও অংশ নেন- বিএনপির হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শিরিন সুলতানা, মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, শামীমুর রহমান শামীম,তাইফুল ইসলাম টিপু,মনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, বিলকিস ইসলাম, হায়দার আলী লেলিন, ফরিদা ইয়াসমীন, হাসান জাফির তুহিন, মশিউর রহমান বিপ্লব, মহানগরের আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, যুব দলের সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, এসএম জাহাঙ্গীর, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, উলামা দলের মাওলানা নজরুল ইসলাম তালুকদার, মতস্যজীবী দলে আবদুর রহিম, ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ।