নিউইয়র্ক (ইউএনএ): যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বৃহত্তর সিলেটবাসীদের ‘মাদার সংগঠন’ হিসেবে পরিচিত জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকার সাধারণ আগামী মার্চে নির্বাচন অনুষ্ঠান সহ কতিপয় সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়েছে। সভায় সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের রিপোটের উপর দীর্ঘ আলোচনা এবং এসব রিপোর্টে আরো স্বচ্ছ ও বিস্তারিত হওয়া দরকার বলে সংগঠনের সদস্যরা অভিমত ব্যক্ত করেন। এছাড়াও সভায় ফিলাডেলফিয়ায় সংগঠনের বাগী ক্রয়-বিক্রয় এবং সাবেক সভাপতি জন এন উদ্দিনের কাছে থাকা অর্থ ফেরত আনার বিষয়টিও আলোচিত হয় এবং এসব বিষয়ে কোন কোন সদস্য স্পষ্টতা ও ব্যাখ্যা দাবী করেন। উল্লেখ্য, এসোসিয়েশনের গঠনতন্ত্র মোতাবেক চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে নির্বাচন এবং নির্বাচনের অন্তত ১২০দিন আগে নির্বাচন কমিশন গঠনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও মহামারী করোনা পরিস্থিতিতে এর কোনটাই সম্ভব নয় বলে সভার এক প্রস্তাবে মার্চ মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়।
সিটির উডসাইডস্থ কুইন্স প্যালেসে গত ৫ সেপ্টেম্বর রোববার সন্ধ্যায় এই বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। শান্তিপূর্ণ এই সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মইনুল হক চৌধুরী হেলাল। এসময় সংগঠনের ট্রাষ্টিবোর্ডের সদস্য যথাক্রমে এম এম শাহীন, তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী, আজমল হোসেন কুনু, আব্দুস শহীদ, এডভোকেট নাসির উদ্দিন, আজিমুর রহমান বুরহান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাসিব মামুন মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন।
সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং করোনায় মৃত্যুবরণকারীদের বিদেহী আতœার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করেন সংগঠনের কর্মকর্তা জামাল আনসারী। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসোসিয়েশনের সহ সভাপতি আহবাব চৌধুরী খোকন। সংগঠনের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ সংগঠনের কর্মকর্তা ও সদস্যদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের স্মরণে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন সহ সভাপতি শফি উদ্দিন তালুকদার। এরপর জাতীয় স্গংীত পরিবশেন করেন সংগঠনের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা সুতিপা চৌধুরী।
সভায় সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের রিপোর্ট পেশ করেন যথাক্রমে সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান শেফাজ ও কোষাধ্যক্ষ মইনুল ইসলাম। সাধারণ সম্পাদক শেফাজ তার দীর্ঘ রিপোর্টে সংগঠনের বিভিন্ন কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরেন। কোষাধ্যক্ষ মইনুল তার রিপোর্টে ২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সংগঠনের আয়-ব্যয়ের প্রতিবেদন তুলে ধরেন। তিনি জানান, এই সময়ে সংগঠনের আয় হয়েছে ৩১ হাজার ১৪০ ডলার। এছাড়াও এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কবর কেনা বাবদ ৯০ হাজার ৭৫০ ডলার ব্যয় করা হয়েছে। বর্তমানে এই কবরের মুল্য ১ লাখ ৮৫ হাজার ডলার। এছাড়াও ব্যাংকে গচ্ছিত রয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৩৯৩ ডলার। এর বাইরের সাড়ে ৮ হাজার ডলার আমার পকেট থেকে সংগঠনের অফিস ভাড়া পরিশোধ করা হয়েছে। যা হিসেবে নেই। সভায় উপস্থিত দুই ডজনেরও বেশী সদস্য সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের রিপোর্টের উপর মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন।
সভার মুক্ত আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে এম এম শাহীন, আজমল হোসেন কুনু, তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী, এডভোকেট নাসির উদ্দিন, আজিমুর রহমান বুরহান, আব্দুস শহীদ, আব্দুর নূর বড় ভুইয়া, মাহমুদুল হক সানু, আতাউর রহমান সেলিম, মোহাম্মদ ফজলুর রহমান, ফারুক চৌধুরী, আনোয়ার হোসেন, আব্দুল হাসিব মামুন, মকবুল রহীম চুনুই, শেখ আতিক, আহবাব চৌধুরী খোকন, এএফ মিসবাহউজ্জামান, জোসেফ চৌধুরী, মির্জা মামুন রশীদ, কাওসারুজ্জামান কয়েস, জাবেদ উদ্দিন, আব্দুল করীম চৌধুরী, আব্দুল বাসিত খান বুলবুল, সাইফুর খান হারুন, সাইকুল ইসলাম, সুদিপা চৌধুরী প্রমুখ অংশ নেন।
সভায় গৃহীত অন্যান্য সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে- কার্যকরী কমিটির মেয়াদ তিন বছরের স্থলে দুই বছর এবং তা আগামী নির্বাচনের পর থেকে কার্যকর হবে। সদস্য ফি ১৫ ডলারের পরিবর্তে ১০ ডলার এবং সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের দায়িত্বপালনকালীন সময়ে প্রবাসের অন্য কোন আঞ্চলিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের দায়িত্ব গ্রহণ বা পালন করতে পারবেন না মর্মে গঠনতন্ত্র সংশোধনী আনা হয়।