যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপসহ আওয়ামী লীগ-বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়েছে বাংলাদেশিদের ব্যবসা কেন্দ্র খ্যাত জ্যাকসন হাইটস এলাকা। বিকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নানা ধরনের সমাবেশের ফলে এতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় ভীতসন্তস্ত্র হয়ে পড়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশিদের এহেন কর্মকাণ্ড সামাল দিতে নাজেহাল হয়ে পড়েছে নিউইয়র্ক পুলিশ।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী পরিবার নামে একটি গ্রুপ শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টার দিকে বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। কিন্তু সংবাদ সম্মেলন শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে অনুষ্ঠানের কর্তৃত্ব ও কারা কারা মঞ্চে বসবে এ নিয়ে দরুদ মিয়া রনেল ও কায়কোবাদ খানের মধ্যে তুমুল বাদানুবাদ ও ধস্তাধস্তি হয়। এটাই শনিবারের প্রথম অপ্রীতিকর ঘটনা বলে জানা গেছে।
শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় সন্ধ্যা সাড়ে ৮টার দিকে বিএনপি নেতা গিয়াস আহমদে ও মাওলানা আতিকুর রহমানসহ নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির প্রায় ১০-১৫ জন কর্মী যেখানেই হাসিনা সেখানেই প্রতিরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এক সমাবেশের আয়োজন করেন।
অপরদিকে পাশে অবস্থান নেওয়া যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের সমাবেশে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী বিএনপির সমাবেশ পণ্ড করতে তাদের দিকে তেড়ে আসেন। উভয় দল মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে মারমুখী হয়ে ওঠেন। উভয়ের মধ্যে চলে পাল্টা গালাগালিসহ ধাক্কাধাক্কির ঘটনা। পুলিশ আসার খবর পেয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে উভয় দলের সদস্যরা।
নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ ৭৩ স্ট্রিটে একটি অস্থায়ী কার্যালয়ে স্থাপন করলে অদূরে ৩৭ অ্যাভিনিউতে একটি অস্থায়ী কার্যালয়ে স্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি। কিন্তু বিএনপির অফিস স্থাপন নিয়ে দেখা দেয় বিপত্তি। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সমর্থকরা অফিস স্থাপনে বাধা দিলে শুরু হয় তুমুল মারামারি। শনিবার রাত ১০টার দিকে জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিট ও ৩৭ অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। দুইপক্ষের মধ্যে দীর্ঘসময় চলতে থাকে হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তি।
এ সময় উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। নিউইয়র্ক পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুইপক্ষের মাঝে অবস্থান নেয়। প্রায় এক ঘণ্টা স্থায়ী হয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের উত্তেজনা। পরে পুলিশ দুইপক্ষকে এলাকা ত্যাগে বাধ্য করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।