ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমিন ও ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনের জামিন চেয়ে করা আবেদন খারিজ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে বিচারিক আদালতের দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি।
এর আগে গত রোববার (১৫ ডিসেম্বর) এ আবেদনের ওপর শুনানি সম্পন্ন হয়। এদিন খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘২০১৬ সালের নভেম্বর ডেসটিনি তাদের গাছ বিক্রি করে টাকা দেবে, এমন শর্তে আপিল বিভাগ তাদের দুজনকে জামিন দিয়েছিলেন। এ শর্ত সংশোধন চেয়ে তারা ২০১৭ সালে আপিল বিভাগে আবেদন করেছিলেন। এই আবেদন চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর খারিজ হয়ে যায়। এখন তারা আবার জামিন চাইলেন। কিন্তু কোনো শর্ত পূরণ করলো না। আমরা আবেদন খারিজ করার আর্জি জানিয়েছি।’
২০১২ সালের ৩১ জুলাই রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসেনসহ ডেসটিনি গ্রুপের ২২ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কলাবাগান থানায় দুটি মামলা করে দুদক। ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ (এমএলএম) ও ট্রি-প্ল্যানটেশন প্রকল্পের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগৃহীত অর্থের মধ্যে ৩ হাজার ২৮৫ কোটি ২৫ লাখ ৮৮ হাজার ৫২৪ টাকা আত্মসাৎ করে পাচারের অভিযোগে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দুটি করা হয়। বর্তমানে এ মামলায় দুজনই কারাগারে রয়েছেন।
২০১৬ সালের ২০ জুলাই শর্তসাপেক্ষে রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসেনকে জামিন দেন হাইকোর্ট। পরে দুদকের আবেদনে তা স্থগিত করে দেন আপিল বিভাগ। এ আবেদনের শুনানির একপর্যায়ে আত্মসাৎ করা টাকা জমা দেওয়ার কথা বলেন সর্বোচ্চ আদালত। সে অনুসারে ওই বছরের ১৩ নভেম্বর ডেসটিনির পক্ষ থেকে গাছ বিক্রি করে টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়।
ওইদিন হলফনামা দিয়ে আদালতকে জানানো হয় যে, তাদের কাছে ৩৫ লাখ গাছ আছে। প্রতিটি গাছ আট হাজার টাকায় বিক্রি করে দুই হাজার ৮শ কোটি টাকা দিতে পারবেন তারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে জামিনের শর্ত পূরণে আপিল বিভাগ দুই আসামি যে কারাগারে আছেন, সেখানে তাদের সঙ্গে গাছ বিক্রির সব কাগজপত্রে সই ও আলোচনার সুযোগ দিতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
ডেসটিনি ট্রি-প্ল্যান্টেশনের সিইও ড. শামসুল হক ভূঁইয়া এমপির তত্ত্বাবধানে সব কাজ সম্পন্ন হবে। যদি গাছ বিক্রি করে দুই হাজার ৮শ কোটি টাকা দিতে না পারেন। তাহলে নগদ দুই হাজার ৫শ কোটি টাকা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জমা দেবেন তারা। এর অনুলিপি দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানকে পাঠাতে হবে। এরপর যারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, যাচাই করে তাদের কাছে টাকা হস্তান্তরের পর জামিনে মুক্তি পাবেন দুই কর্মকর্তা।
কিন্তু কয়েকমাস পরে তারা এ আদেশের সংশোধন চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে কারাগারে থাকায় এ শর্ত পূরণ সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করেন তারা। পরে ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর আপিল বিভাগ সংশোধন চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দেন।