শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৬ অপরাহ্ন

ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২১
  • ২২৩ বার

দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংস ঘটনা অব্যাহত থাকার বিষয়টি উদ্বেগজনক। প্রথম ধাপের নির্বাচনে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ, গোলাগুলি, ধাওয়া-পালটাধাওয়া- এসব ঘটনা ঘটার প্রেক্ষাপটে দেশবাসী আশা করেছিল দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে লক্ষ করা যাচ্ছে, দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করেও দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংস ঘটনা ঘটছে। নরসিংদীর রায়পুরার কাচারিকান্দি গ্রামে বৃহস্পতিবার দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ২ জন নিহত ও কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনি অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেক স্থানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জানা গেছে, হামলার পর অনেক প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা ফের হামলার ভয়ে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।

ইউপি নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে হলেও নির্বাচনি প্রচারণা সব ক্ষেত্রে দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। নির্বাচনি প্রচারণাকালে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনা দেখা দেয়। নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রার্থী ও সমর্থকদের মরিয়া চেষ্টা শেষ পর্যন্ত রূপ নেয় সহিংসতায়। এ কারণে নির্বাচনের আগে সহিংসতা রোধে পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। সব নির্বাচনই শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হোক-এটাই সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নিশ্চিন্ত মনে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদান করতে পারলে তাতে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য প্রকাশ পায়। কিন্তু দুঃখজনক হলো, আমাদের দেশের নির্বাচনগুলো শতভাগ সহিংসতামুক্ত হতে পারছে না। বস্তুত রাজনৈতিক সংস্কৃতির নিুমানই নির্বাচনে সহিংসতার মূল কারণ।

ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, অতীতেও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে বিভিন্ন ধরনের সংঘাত ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সেসব তথ্য বিবেচনায় রেখে এবারও যাতে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে কোনো ধরনের সংঘাত ও সংঘর্ষের ঘটনা না ঘটে সে জন্য কর্তৃপক্ষের করণীয় নিয়ে নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নানা মহল থেকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা প্রদান করা হয়েছিল। দুঃখজনক হলো, তারপরও ইউপি নির্বাচনে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সরকার থেকে শুরু করে জাতীয় নির্বাচন-প্রতিটিতেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বের বিষয়টি নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন এবং স্থানীয় পর্যায়ের অন্যান্য নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারণা ও ভোটগ্রহণ যাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হতে পারে, সেদিকে ইসি ও রাজনৈতিক দলগুলোকে বিশেষ নজর দিতে হবে। ইসিকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদেরও নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে চলতে হবে। নির্বাচনের সব অংশীজন উন্নত রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিচয় না দিলে এককভাবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করা বেশ কঠিন। কাজেই উন্নত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় সব নির্বাচনের আগে, নির্বাচন চলাকালীন এবং নির্বাচনের পর সংশ্লিষ্ট সবাই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন, এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com