মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩১ অপরাহ্ন

কনকনে ঠান্ডায় গরম ফুটপাতের বাজার

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯
  • ২৬৩ বার

স্বল্প আয়ের মানুষের কেনাকাটার প্রধান বাজার রাজধানীর ফুটপাথ। দেশব্যাপী হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা নিবারণ করতে শীতের পোশাক কিনছে স্বল্প আয়ের মানুষরাও। ফলে ভিড় বেড়েছে ফুটপাথের গরিবের মার্কেটে। এই সুযোগে দুই থেকে তিন গুণ বাড়তি দাম হাঁকাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। শনিবার সকালে রাজধানীর মতিঝিল, গুলিস্তান, বায়তুল মোকাররম, মালিবাগ, মৌচাক, ফার্মগেট, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, বঙ্গবাজার, নিউ মার্কেট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।

সরেজমিন দেখা যায়, শীতের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে দোকানগুলোতে গরম পোশাক বিক্রিরও হিড়িক পড়ে গেছে। রাজধানীর ফুটপাথ এখন শীতবস্ত্রের দখলে। ক্রেতাও প্রচুর। বেশি বিক্রি হচ্ছে ছোট শিশু ও বয়স্কদের কাপড়। মাথার টুপি, পায়ের মোজা, হাতমোজা, মাফলার, সোয়েটার, জাম্পার, ফুলহাতা গেঞ্জি, কম্বলের দোকানের ভিড় চোখে পড়ার মতো।

ফুটপাথে ভিড় করা ক্রেতারা বলছেন, শীতের শুরুতে কেনা পোশাক এ তীব্র শীতে কোনো কাজে লাগছে না। তাই তারা আবার ছুটছেন কনকনে শীত থেকে বাঁচতে পারেন এমন পোশাকের সন্ধানে। আর ক্রেতাদের এ চাহিদাকে পুঁজি করে বিক্রেতারা দাম হাঁকাচ্ছেন কয়েক গুণ বেশি। অস্বাভাবিক দাম হাঁকানোর অভিযোগ তুলে বাগি¦তণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন অনেকে। তবে অনেকটা অসহায়ের মতোই দোকানির চাওয়া দামেই কিনে নেন পছন্দের একটি শীতবস্ত্র।

গত কয়েক দিনের শৈত্যপ্রবাহ রাজধানীবাসীকেও অনেকটা অসহায় করে তুলেছে। আর এ সুযোগ নিয়ে হকাররাও শীতের পোশাকের দাম হাঁকাচ্ছেন দ্বিগুণ। দুই সপ্তাহ আগেও যে পোশাক ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, তা এখন কমপক্ষে ৪০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, বর্তমানে শীতের কাপড়ের চাহিদা অনেক বেশি। বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করলেও গত কয়েক দিন ধরে দাম একটু বেশিই বলে স্বীকার করেন একাধিক বিক্রেতা। বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনের ফুটপাথের হকার শফিকুল বলেন, গত কয়েক দিন ধরে প্রতিদিন গড়ে ২৫ থেকে ৩০টি কম্বল বিক্রি হয়। পাতলা কম্বল বিক্রি হয় না বললেই চলে। শীতের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে কম্বলের চাহিদা বেড়ে গেছে।

গত কয়েক দিনে বড়দের পাশাপাশি শিশুদের পোশাকের বিক্রিও অনেকটা বেড়ে গেছে। জিপিওর সামনে ফুটপাথ ব্যবসায়ী কামাল হোসেন জানান, শিশুদের শীতের পোশাকের চাহিদা অনেক বেশি। তার দোকানে শুধু শিশুদের পোশাকই বিক্রি হচ্ছে প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার।

অতিরিক্ত দাম হাঁকানোর অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, পৌষের শুরুতে টুকটাক বেচাবিক্রি থাকলেও মঙ্গলবার থেকে ক্রেতার চাপ বেড়ে গেছে। পাইকারি মার্কেটে দাম বেশি; তাই আমরা কম দামে বেশি বিক্রি করতে পারছি না। অন্য সময়ে যে জ্যাকেটের দাম এক শ’ টাকা, এখন তা তিন শ’ টাকা হাঁকাচ্ছি। তবে দুই শ’ টাকা হলে ছেড়ে দিচ্ছি। ক্রেতারাও কম কথা বলে কিনে নিচ্ছেন পছন্দের জিনিসটি।
গতকাল মৌচাক মার্কেটে শীতের জামা কিনতে যান আলেয়া বেগম। তিনি বলেন, শীতের শুরুতে কিছু পোশাক কেনা হয়েছে; কিন্তু শীতের তীব্রতায় ওই পোশাক কোনো কাজে লাগছে না। তবে দোকানে দোকানে ক্রেতার ভিড় প্রচুর। আর এ সুযোগে বিক্রেতাও দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। কয়েক দিন আগেও যে কাপড় ৩০০-৪০০ টাকায় ছিল, এখন তা হাজার টাকার কমে দিতেই চাইছে না।

এ দিকে পৌষের শুরুতেই মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশার কারণে হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডায় বিপর্যস্ত জনজীবন। সাধারণ মানুষের জীবনে নেমে এসেছে চরম ভোগান্তি। ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু ও বৃদ্ধরা। শীতে কাঁপছে রাজধানীর ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষ। তাদের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি বা বেসরকারি কোনো সাহায্য-সহযোগিতা। নিদারুণ কষ্টে দিন পার করছে তারা। কিছু কিছু এলাকায় আগুন জ্বালিয়ে গরিব লোকজনকে হাত-পা গরম করতে দেখা গেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com