যুক্তরাষ্ট্রে ওমিক্রন সংক্রমণের আরো ঘটনা ধরা পড়ল। নিউ ইয়র্কে নতুন করে তিনজনের শরীরে ভেরিয়েন্টটি মিলেছে। নিউ জার্সি, জর্জিয়া, পেনসিলভ্যানিয়া, মেরিল্যান্ড… এক এক করে বিভিন্ন রাজ্যে ধরা পড়ছে ওমিক্রন সংক্রমণ। আর ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে করোনার ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের অতি-সংক্রমণ ক্ষমতা।
নিউ ইয়র্কের স্বাস্থ্য কমিশনার মেরি ব্যাসেট বলেন, ‘স্ট্রেনটি ঢুকে পড়েছে। এবং যেমন আশঙ্কা করা হয়েছিল, ক্রমশই ‘কমিউনিটি স্প্রেড’ ঘটছে। অর্থাৎ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে।’
নিউ ইয়র্কে এ পর্যন্ত মোট ৮টি সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এর মধ্যে সাতটিই নিউ ইয়র্ক সিটিতে। নেব্রাস্কা, মিনেসোটা, ক্যালিফর্নিয়া, হাউয়াই, উটাহ, কলোরাডোয় ছড়িয়ে পড়েছে স্ট্রেনটি। তবে এ পর্যন্ত যা ‘সুখবর’, সংক্রমণ বাড়লেও ওমিক্রনে কোনো মৃত্যুর খবর নেই।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এবং বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ, সকলেই অবশ্য সাবধান থাকার পরামর্শ দিচ্ছে। আমেরিকার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘ওমিক্রন সংক্রমণ বাড়বেই। আরো সংক্রমণ ধরা পড়বে। কিন্তু আমরাও তৈরি রয়েছি। এর থেকে বাঁচতে সকলে ভ্যাকসিন নিয়ে নিন, দরকারে বুস্টার ডোজ় নিন এবং অবশ্যই মাস্ক পরুন।’
প্রতি দিনই নতুন করে কোনো না কোনো দেশে ওমিক্রনের প্রবেশের খবর মিলছে। আজ মালয়েশিয়ায় প্রথম স্ট্রেনটি চিহ্নিত হয়েছে। এবং সেই সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।
এ দেশে দক্ষিণ আফ্রিকার নাগরিক এক ছাত্রীর দেহে ওমিক্রন মিলেছে। ১৯ বছর বয়সী ওই ভিন্দেশি শিক্ষার্থী গত মাসে পরিবারের সাথে দেখা করতে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিলেন। ১৯ নভেম্বরে তিনি সিঙ্গাপুর হয়ে মালয়েশিয়া ফেরেন। পরের দিনই কোভিড পরীক্ষার ফল পজেটিভ আসে। কিন্তু তখন ওমিক্রন স্ট্রেনের কথা জানা ছিল না। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪ নভেম্বর ঘোষণা করে নতুন স্ট্রেনের আবির্ভাবের খবর। এখন নতুন করে ওই কোভিড আক্রান্ত তরুণীর জেনোমিক সিকোয়েন্সিং করতে দেখা গিয়েছে, তিনি শুধু কোভিড আক্রান্তই ছিলেন না, ওমিক্রন স্ট্রেনে সংক্রমিত হয়েছিলেন। মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী খইরি জামালুদ্দিন বলেন, ‘যেটা গুরুত্বপূর্ণ, ওই তরুণী সংক্রমিত ধরা পড়ার পর থেকে কোয়রান্টিন আছেন। তার টিকাকরণ আগেই সম্পূর্ণ হয়েছিল। সংক্রমিত হলেও কোনো উপসর্গ নেই।’ তিনি আরো জানান, ছাত্রীটি যাদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
এই কারণেই আমেরিকায় প্রবেশে বিদেশী যাত্রীদের থেকে কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট চাওয়া হচ্ছে। ব্রিটেনও একই নিয়ম জারি করেছে। এ দেশেও ঢোকার আগে প্রত্যেককে নেগেটিভ রিপোর্ট জমা দিতে হবে। অর্থাৎ প্রি-ডিপারচার টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ হতে হবে। নাইজিরিয়াকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ তালিকায় যোগ করা হয়েছে। অর্থাৎ রিপোর্ট নেগেটিভ হলেও প্রবেশে অনুমতি নেই। ব্রিটেন সফরের ক্ষেত্রে নতুন নিয়মটি হচ্ছে— যে দেশ থেকে যাত্রী যাবেন, যাত্রা শুরুর আগে পরীক্ষা করাতে হবে। আরটিপিসিআর বা ল্যাটেরাল ফ্লো টেস্ট। তবে ৪৮ ঘণ্টার বেশি আগে টেস্ট করালে চলবে না। টিকাকরণ সম্পূর্ণ হোক বা না-হোক, প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই এই নিয়ম। ১২ বছরের ঊর্ধ্বে সকলকে নেগেটিভ রিপোর্ট পকেটে নিয়েই ব্রিটেন সফর করতে হবে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা