সাবেক পররাষ্ট্র সচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীকে বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়েছে। এর আগে সকালে সেখানে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম, সাবেক অর্থমন্ত্রী এএমএ মুহিত, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, নবনিযুক্ত পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, কূটনীতিক কর্পসের ডিন ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রদূত আর্চবিশপ জর্জ কোচেরি, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস, সাবেক কূটনীতিক এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মোয়াজ্জেম আলীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে প্রতিনিধিরা মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম আলীর কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) এর সদস্যরাও মোয়াজ্জেম আলীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, বুধবার জোহরের নামাজের পর গুলশান আজাদ মসজিদে মোয়াজ্জেম আলীর দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে এবং শুক্রবার কুলখানি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।
সাবেক কূটনীতিক সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী সোমবার ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। সরকারি চাকরি থেকে অবসরের পরও মোয়াজ্জেম আলী চুক্তিভিত্তিক নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত নভেম্বরে সেটার মেয়াদও শেষ হওয়ায় দেশে ফিরে আসেন তিনি।
মোয়াজ্জেম আলী ১৯৪৪ সালের ১৮ জুলাই সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএস পাস করেন। এরপর তিনি পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন এবং লাহোরের সিভিল সার্ভিস একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত তিনি জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অফ অ্যাডভান্সড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজে পড়াশোনা করেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন। পরে বিদ্রোহ করে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্যের ঘোষণা দেন। মোয়াজ্জেম আলী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাস খুঁজে পেতে সহায়তা করার পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘের বাংলাদেশের পুনর্গঠনে সহায়তা করেছিলেন।
১৯৭৫ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি পোল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন। ১৯৮২-১৯৮৬ সালে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের স্থায়ী মিশন এবং ১৯৮৬-১৯৮৮ সালে ভারতে বাংলাদেশি হাইকমিশনার হিসেবে কাজ করেছিলেন। সূত্র : ইউএনবি।