বাংলাদেশের লেখক ও প্রকাশকদের নিউইয়র্ক বইমেলায় যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, আগামীতে বহির্বিশ্বে বাংলা বইমেলার প্রসার ঘটাতে মুক্তধারা নিউ ইয়র্ক আয়োজিত বইমেলার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। বাংলা একাডেমিতে আয়োজিত ‘বহির্বিশ্বে বাংলা বইমেলা ও মুক্তধারা নিউ ইয়র্ক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
২৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার শাহ গ্রুপের সহযোগিতায় বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব এই আলোচনা সভার করে।
অভিবাসী বাঙালি সমাজ ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাংলা ভাষার গুরুত্ব তুলে ধরার উদ্দেশ্য নিয়ে ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মুক্তধারা নিউ ইয়র্ক। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমেরিকায় প্রতি বছর নিউ ইয়র্ক বইমেলা ও বাংলাদেশ উৎসবের আয়োজন করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। এই বই মেলা ঘিরে আমেরিকায় প্রতি বছর বাঙালি লেখক, প্রকাশক ও পাঠকের মহামিলন ও চিন্তার যোগসূত্র তৈরি হয়। দীর্ঘ ৩০ বছরের পথ চলায় প্রবাসে বাংলা ভাষার চর্চা, বাংলা বইয়ের প্রচার, বাংলা ভাষার প্রসার এবং দেশের বাইরে বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় মুক্তধারা নিউ ইয়র্কের রয়েছে বিশেষ অবদান। মুক্তধারা নিউ ইয়র্কের এই অবদানের কথা স্বীকার করে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো ‘বহির্বিশ্বে বাংলা বইমেলা ও মুক্তধারা নিউ ইয়র্ক’ শীর্ষক আলোচনা সভা।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, অর্থনীতিবিদ ড. আতিয়ার রহমান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, কবি ও কথাসাহিত্যিক ইকবাল হাসান, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ, শিল্পী ও সাংবাদিক নবনীতা চৌধুরী ও নাট্যকর্মী ও গবেষক বাবুল বিশ্বাস।
স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. সানাউল হক। কবি ইউসুফ রেজার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান ও কবি শ্যামসুন্দর শিকদার।
আলোচকরা বহির্বিশ্বে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশে মুক্তধারা নিউ ইয়র্ক তথা মুক্তধারা ফাউন্ডেশন এবং এর প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বজিত সাহার নিরবিচ্ছিন্ন প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে তাকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানান। অর্থনীতিবিদ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভনর ড. আতিয়ার রহমান ও কথাসাহিত্যিক ও কবি ইকবাল হাসান তাদের বক্তব্যে বহির্বিশ্বে বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতি বিকাশে বিশেষ অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও স্বীকৃতি দেয়ার দাবি জানান।
বক্তারা বলেন, ১৯৯২ সালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে অস্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপন করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও বাংলা বইমেলা আয়োজনের মাধ্যমে মুক্তধারা নিউ ইয়র্কের যাত্রা শুরু হয়েছিল। ৩০ বছরের পথচলায় প্রতিষ্ঠানটি যেমন ফাউন্ডেশনে রূপান্তরিত হয়েছে, তেমনি প্রবাসে বাংলা ভাষার চর্চা ও মর্যাদা বৃদ্ধিতে পথপ্রদর্শকের ভূমিকায় উত্তীর্ণ হয়েছে। উত্তর আমেরিকাসহ গোটা বিশ্বে বাংলা ভাষাকে ছড়িয়ে দেওয়ার পেছনে এই ফাউন্ডেশনের অবদান রয়েছে।
অনুষ্ঠানে দুটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। একটি ১৯৯২ সালে জাতিসংঘের সামনে একুশের ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের ওপর নির্মিত, অন্যটি মুক্তধারা নিউ ইয়র্কের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শিশু-কিশোর মেলা কর্তৃক বিশ্বজিত সাহাকে উৎসর্গ করে নির্মিত।