মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৬ অপরাহ্ন

পাঁচ বছর পর রোহিঙ্গা নিধনকে ‘গণহত্যা’ বলল যুক্তরাষ্ট্র

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ, ২০২২
  • ১২৫ বার

মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী কর্তৃক সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের নিধনকে পাঁচ বছর পর আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন স্থানীয় সময় সোমবার (২১ মার্চ) ওয়াশিংটনের ইউএস হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে যুক্তরাষ্ট্রের এই স্বীকৃতির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন। এই হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিয়ে একটি প্রদর্শনী চলছে।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সামরিক বাহিনীর সহিংসতার শিকার হন কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। তাদের নিধনে চালানো হয় গণহত্যা। জীবন বাঁচাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে ১০ লাখের বেশি মানুষ আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওআইসির সহযোগিতায় ২০১৯ সালে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলা করে গাম্বিয়া। ওই বছর মামলার প্রথম দফার শুনানিও হয়; কিন্তু এসব ঘটনার পরও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংসতাকে গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়া থেকে বিরত ছিল যুক্তরাষ্ট্র।

রোহিঙ্গা নির্যাতনকে দ্রুত গণহত্যা হিসেবে স্বীকার করার জন্য সংশ্লিষ্ট তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। এতে সহায়তা করেছে অন্য একটি আইনি সংস্থা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় ১৪ মাস পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়ে মিয়ানমারে সহিংসতার বিষয়টি নতুন করে পর্যালোচনা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অ্যান্টনি ব্লিংকেন। এর আগে বিষয়টি স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।
যুক্তরাষ্ট্র এই প্রথম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনীর সহিংসতাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন গত বছরের ডিসেম্বরে মালয়েশিয়া সফরের সময় বলেছিলেন, রোহিঙ্গাদের প্রতি মিয়ানমারের আচরণ গণহত্যা কি না, তা খুবই সক্রিয়ভাবে খতিয়ে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র।

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে মামলা চলছে। দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ২০১৯ সালে মামলাটির প্রাথমিক শুনানি শুরু হয়। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের নভেম্বরে আইসিজেতে মামলাটি করে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।

জাতিসংঘের একটি ‘ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন’ ২০১৮ সালে এই উপসংহারে পৌঁছায় যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযানে ‘গণহত্যামূলক কাজ’ অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে তখন ওয়াশিংটন এই নৃশংসতাকে ‘জাতিগত নির্মূল’ হিসেবে অভিহিত করেছিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে এই শব্দবন্ধের কোনো আইনগত সংজ্ঞা নেই।

সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য সেন জেফ মার্কলে রোববার এক বিবৃতিতে বলেছেন, অবশেষে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতাকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আমি বাইডেন প্রশাসনকে সাধুবাদ জানাই। যদিও অনেক দেরিতে এই স্বীকৃতি এসেছে। তবুও মিয়ানমার জান্তাকে জবাবদিহি করতে এই স্বীকৃতি একটি শক্তিশালী এবং সমালোচনামূলকভাবে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

এ বিষয়ে জানতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের পক্ষ থেকে ওয়াশিংটনে মিয়ানমার দূতাবাসের কর্মকর্তা এবং দেশটির সামরিক জান্তার এক মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো মন্তব্য করেননি তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com