মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪১ অপরাহ্ন

আতিককে শোকজ করার নির্দেশ কমিশনের

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২০
  • ৩৪৩ বার

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় আসন্ন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আতিকুল ইসলামকে শোকজ করার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম খবরটি নিশ্চিত করেছেন।

রোববার রাজধানীর আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে নিজের দফতরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম। আর ডিএনসিসির রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাসেম বলেছেন, মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামের এই অফিস উদ্বোধন নির্বাচনী বিধির লঙ্ঘন প্রমাণিত হলে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের যে বিধিবিধান আছে, সেটার আলোকেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গত শনিবার বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল নির্বাচন কমিশনে (ইসি) প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইাসলাম বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বলেছি যেন তাকে শোকজ করা হয়। একই সাথে কেন এ ধরনের ঘটনায় ঘটেছে, সেটি যেনো জানতে চাওয়া হয়।

তাবিথ আউয়াল তার অভিযোগপত্রে বলেন, শনিবার (৪ জানুয়ারী) সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরোশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ঢাকা উত্তরের গুলশান-১ এলাকার গুলশান পার্কে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে একটি নির্বাচনী মঞ্চ করেন। এসময় মাইক ও সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করে নিজের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন। ভোটারদের কাছে যাওয়ার জন্য কর্মীদের দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। যা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা-২০১৬’র স্পষ্ট লঙ্ঘন ও গর্হিত অপরাধ।

প্রার্থীদের আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রথমত হচ্ছে যে, নির্বাচনী আচরণবিধি যদি কেউ লঙ্ঘন করে প্রার্থী হয়ে। তবে এখন পর্যন্ত প্রার্থী কেউ হয়নি। প্রার্থী হবে যেদিন প্রতীক বরাদ্দ হবে। সেদিন থেকে আমরা প্রার্থী বলতে পারবো। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বলবো, যেই হোক না কেন, আইন লঙ্ঘন করলে যেন ব্যবস্থা নেয়। আইনে যা সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।

আচরণবিধিতে যেই অংশটুকু প্রার্থীর জন্য প্রযোজ্য, সেই অংশটুকু প্রার্থী হওয়ার পর প্রয়োগ করা যাবে। আর প্রার্থী হওয়ার আগে আচরণবিধি যে অংশটুকু সেটা মূলত রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য প্রতিপালনীয়। কারণ তারা মনোনয়ন দিয়ে দিয়েছে। সে বিষয়ে আইনে যা কিছু আছে, সে আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অবশ্যই বলবো।

তিনি বলেন, মিছিল করা, রাস্তা বন্ধ করে কোনো প্রচার শুরু করলে, রিটার্নিং কর্মকর্কাকে বলবো তার বিরুদ্ধে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।

উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলামের নির্বাচনী ক্যাম্প উদ্বোধন, মোটরসাইকেল র‌্যালি, নেতাকর্মীদের স্লোগান এবং সংসদ সদস্য (এমপি) ক্যাম্প উদ্বোধন করতে পারে কিনা, আইন কী বলে, এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার
রফিকুল ইসলাম বলেন, আইনে আমরা তাকে বিরত থাকার জন্য বলবো। যদি বিরত না থাকে, আমরা শোকজ করবো। উল্লেখ্য, আতিকুল ইসলামের নির্বাচনী ক্যাম্পটি রোববার (৫ জানুয়ারি) উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন।

রফিকুল ইসলাম বলেন, সংসদ সদস্য ক্যাম্প উদ্বোধন করতে পারেন কিনা- এখানে কিন্তু একটা বিষয় আছে, আচরণবিধিতে অবশ্যই সংসদ সদস্যরা আমাদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নিতে পারে না। এখানে কিন্তু আইনের একটা ফাঁক আছে। প্রচারণায় অংশ নিতে পারে না, কিন্তু এটা প্রচারণার (ক্যাম্প উদ্বোধন) মধ্যে পড়বে কিনা, এটা বসে দেখতে হবে। প্রচারণায় অংশ নিতে পারবে না। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ প্রার্থী হয় নাই। সবাই সম্ভ্যাব্য প্রার্থী। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারে। দলও মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে পারে।

নিজেরাও প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারে। এই পর্যায়ে হচ্ছে আইনে কী কী করা যাবে, এ জিনিসগুলো নিয়ে কমিশনের একটু বসতে হবে। বসে আইনানুগ ব্যবস্থা, যাতে করে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কেউ কিছু না করতে পারে। আইনের কিছু কিন্তু অস্পষ্টতা আছে। কারণ প্রার্থী সেদিনই হবে, যেদিন প্রতীক পাবে। দলীয় মনোনয়নে কোনো প্রার্থী হলে, ওই দিনই কিন্তু প্রার্থী বলে গণ্য হয়। যদিও অফিসিয়ালি পরে হয়।

রিটার্নিং কর্মকর্তা
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে নিজ কার্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাসেম বলেন, এটা দেখি আগে। আমার একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আর সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আছে। তাদের সাথে আলোচনা করে আপনাদের জানাব।

আচরণ বিধির প্রমাণিত হলে কী ব্যবস্থা নেবেন-জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রমাণিত হলে আমাদের যে বিধিবিধান আছে, সেটার আলোকেই আমরা ব্যবস্থা নেব।

উল্লেখ্য, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালার ২২ নম্বর ধারা ১ নম্বর উপধারা অনুযায়ী, সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্বাচন-পূর্ব সময়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এ রকম পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ উঠেছে, ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ সংসদ সদস্য সাহারা খাতুনের নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আচরণবিধির লঙ্ঘন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com