শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলেইমানির হত্যার বদলা হিসেবে ইরান নিশ্চিতভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের ওপর প্রতিহামলা চালাবে। এমনটাই মনে করেন মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) সাবেক কর্মকর্তা পল পিলার। তেহরান টাইমসে গতকাল তার সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়
প্রশ্ন : প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্র জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে গুপ্তহত্যা করেছে। অভিশংসন এড়াতে ও এর থেকে দৃষ্টি সরাতে ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ালেন ট্রাম্প। আপনি কী মনে করেন?
পল পিলার : বিদেশনীতি ও নিরাপত্তানীতি এবং রাষ্ট্রীয় সব বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের রাজনৈতিক অবস্থান নড়বড়ে। ঘরোয়া রাজনীতিতে যে সমস্যায় তিনি পড়েছেন, হতে পারে সেখান থেকে দৃষ্টি সরাতে তিনি এই গুপ্তহত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু এটাও হতে পারে, ইরানপন্থি ইরাকিদের দ্বারা বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসে যে হামলা হয়েছে, তারই জবাব হিসেবে নিজ প্রশাসনের ভেতর থেকে উঠে আসা অব্যাহত চাপের কারণেই ইরানের ওপর এ ধরনের পাল্টাহামলার নির্দেশ তিনি দিয়েছেন।
প্রশ্ন : কিন্তু এই গুপ্তহত্যার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কি ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করল না?
পল পিলার : দেখুন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ ক্ষেত্রে সত্যটাই বলেছেন। মধ্যপ্রাচ্যে তিনি আর যুদ্ধ চান না; ইরানের বিরুদ্ধেও না। কিন্তু ট্রাম্পের অন্য একটা সমস্যা আছে। তিনি নিজে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, এর পরিণতি তিনি নিজেই ঠিকমতো বুঝতে পারেন না বা বুঝতে চান না। ইরানিরা সোলেইমানির হত্যাকে যুদ্ধ হিসেবেই দেখছে। ট্রাম্প হয়তো এটাকে সেভাবে যুদ্ধ ভাবছেন না।
প্রশ্ন : আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ঘোষণা করেছেন, এ হত্যার কঠিন বদলা নেওয়া হবে। ইরান ঠিক কী ধরনের প্রতিশোধ নিতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
পল পিলার : ইরান, নিশ্চিতভাবেই, বড় ধরনের প্রতিহামলা চালাবে। সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন বলেই না; বরং সোলেইমানি ইরানের জনসাধারণের কাছে একটা বড় চরিত্র। ফলে ইরান পাল্টা হামলা করবেই। হামলার সময় ও ধরন বেছে নেবে নিজেদের মতো। ধারণা করা যেতে পারে, ইরানে সোলেইমানি যে মাপের ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রে সেই মতো কোনো জনপ্রতিনিধি বা ব্যক্তিত্বকে গুপ্তহত্যার চেষ্টা চালাবে তেহরান।
প্রশ্ন : জাতিসংঘ বলছে, জেনারেল সোলেইমানি হত্যা স্পষ্টই আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। আপনার কী মত?
পল পিলার : এই কথার বিরুদ্ধে যুক্তি দেখানো কঠিন। কেননা এই গুপ্তহত্যায় সশস্ত্র হামলা হয়েছে। ইরাকের মাটিতে ইরানি নাগরিকের ওপর হামলা। কিন্তু ইরাকের সরকারের অনুমতি নেওয়া হয়নি কিংবা বাগদাদের কোনো সম্পৃক্ততাও নেই।