জীবন নির্বাহের মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মালিক প্রত্যেক মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর ফেতরা দেওয়া ওয়াজিব। যব, খেজুর, কিশমিশ, পনির ও গম-আটা বা এর বাজারমূল্যে ফেতরা আদায় করা যায়। গম বা আটার মাধ্যমে ফেতরা আদায় করলে আধা সায়া (১ কেজি ৬৫০ গ্রাম)
এবং যব, খেজুর, কিশমিশ, পনিরের মাধ্যমে হলে এক সায়া (৩ কেজি ৩০০ গ্রাম) আদায় করতে হবে। অথবা এর মূল্য আদায় করলেও চলবে। (দুররুল মুখতার ও ফতোয়ায়ে আলমগিরি)।
এ দিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বৈঠকের সিদ্ধান্ত হলো- এ বছর ফিতরার হার জনপ্রতি সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩১০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ইসলামি শরিয়াহ মতে গম, আটা, খেজুর, কিশমিশ, পনির ও যবের যে কোনো একটি দিয়ে ফেতরা দেওয়া যাবে। গম বা আটা দিয়ে ফেতরা আদায় করলে ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য ৬৫ টাকা আদায় করতে হবে। আর খেজুর দিয়ে করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য ২ হাজার টাকা, কিশমিশ দিয়ে আদায় করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য ১ হাজার ৪৮৫ টাকা এবং পনির দিয়ে আদায় করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য ১ হাজার ৫৮৫ টাকা ফেতরা আদায় করতে হবে। নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী সবাই ফেতরা আদায় করবেন।
দুই.
দ্বিতীয় হিজরি সনে ঈদুল ফিতরের কয়েকদিন আগে ইসলামে সর্বপ্রথম ফেতরার বিধান দেওয়া হয়। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) রোজার শেষে বললেন, তোমরা ফেতরা আদায় কর। রাসুল (সা) এক সায়া খেজুর, যব অথবা আধা সায়া গমের মাধ্যমে ফেতরা আদায় মুসমিল নারী-পুরুষের ওপর বাধ্য করেছেন (আবু দাউদ)। ইবনে আব্বাস (রা) সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা) ফেতরা আদায় করতে বলেছেন, যাতে অনৈতিক কথা ও কাজ থেকে রোজাকে পরিশুদ্ধ করে। ফেতরা গরিব-দুঃখীর অধিকারও। (আবু দাউদ শরিফ; হাদিস ১৬১৯)। হজরত আনাস (রা) সূত্রে রাসুল (সা) অন্যত্র বলেছেন- দান সদকার মাধ্যমে আল্লাহর রাগ প্রশমিত হয় এবং দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। (তিরমিজি; হাদিস ৬৫৮)। ফেতরা ইবাদতের সঙ্গে সঙ্গে মানবিক দিকও আছে। ফেতরার সামান্য অর্থে গরিব-দুঃখিরা ঈদ উপভোগ করে। নিঃস্ব-অসহায়দের মুখে হাসি ফোটে।
সম্পাদক, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম