শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৩১ পূর্বাহ্ন

টান টান উত্তেজনার ফাইনালে আজ মুখোমুখি লিভারপুল-রিয়াল মাদ্রিদ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৮ মে, ২০২২
  • ১১৪ বার

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফুটবলের ফাইনালে শনিবার রাতে চূড়ান্ত হবে ইউরোপের সেরা ক্লাবের শিরোপা কোন দলের হাতে উঠবে। এই ম্যাচ নিয়েই মাতামাতি চলছে বিশ্বের ফুটবল অনুসারীদের মধ্যে।

প্রায় ৪০ কোটির মতো মানুষ টেলিভিশন পর্দায় চোখ রাখবে।

মুখোমুখি হবে স্পেনের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ এবং এক পয়েন্টের ব্যবধানে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে দ্বিতীয় হওয়া দল লিভারপুল।

বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শুরু হবে ই ম্যাচটি।

এই আসরের ফাইনালের আয়োজক শহর ফ্রান্সের প্যারিস।

প্যারিসের স্তাদে ডি ফ্রান্সে এই ম্যাচ হবে। একসাথে ৮০ হাজার লোকের বসার ব্যবস্থা আছে এই স্টেডিয়ামে।

এই মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল হওয়ার কথা ছিল রাশিয়ার সেইন্ট পিটার্সবার্গে।

রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পরে ইউরোপিয়ান ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা এই টুর্নামেন্টের ফাইনালের ভেন্যু বদল করে।

রিয়াল মাদ্রিদ ও লিভারপুল এই টুর্নামেন্টের সফলতম দুই দল।

ইউরোপ সেরা ফুটবলারদের লড়াই
বিশ্বের সেরা দুই ফরোয়ার্ড মুখোমুখি হবে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে, রিয়াল মাদ্রিদের ফরাসী স্ট্রাইকার কারিম বেনজেমা ও লিভারপুলের মিসরীয় ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ সালাহ।

মূলত এই দুই ফুটবলারকে ঘিরেই দুই দলের সমর্থকদের আশা প্রত্যাশা।

সালাহ- এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আটটি গোল করেছেন, প্রিমিয়ার লিগে গোল করেছেন ২৩টি।

সাদিও মানে ও দিয়েগো জোতার ওপরও নজর থাকবে, লিভারপুলের এই দুই ফরোয়ার্ড চলতি মৌসুমে ৩১টির মতো গোলে অবদান রেখেছেন।

তবে লিভারপুলের মিডফিল্ডে ভরসার নাম থিয়াগো আলকান্তারা গত রোববার চোট পেয়েছেন, তিনি অনিশ্চিত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে।

লিভারপুলের মিডফিল্ড সামরানোর দায়িত্ব থাকবে জো গোমেজ ও ফ্যাবিনিওর কাঁধে।

ফ্যাবিনিও এক ম্যাচের জন্য রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন ২০১৩ সালে।

রিয়াল মাদ্রিদকে প্রায় একাই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে তুলে এনেছেন কারিম বেনজেমা।

গুরুত্বপূর্ণ সব ম্যাচে শেষ মুহূর্তে গোল করেছেন তিনি।

টানা দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিকসহ, মোট ১৫টি গোল করেছেন চলতি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে- যা সর্বোচ্চ চলতি মৌসুমে।

লা লিগাতেও ২৭ গোল করে সবার ওপরে আছেন এই ফরাসী স্ট্রাইকার। তাকে সঙ্গ দেবেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র, রদ্রিগো এবং লুকা মদ্রিচ।

দুই দলই চলতি মৌসুমে সমীহ করার মতো ফুটবল খেলেছে। তবে ফাইনাল ম্যাচে দক্ষতার পাশাপাশি প্রয়োজন হবে স্নায়ুর নিয়ন্ত্রণ।

সেই ক্ষেত্রে লুকা মদ্রিচের মতো ফুটবলার- ম্যাচের নিয়ন্তা হয়ে উঠতে পারেন, যিনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বেশ কয়েকটি ফাইনাল এমনকি বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালও খেলেছেন।

ভিনিসিয়াস জুনিয়র- এই ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারের নামের পাশে অধারাবাহিক তকমা থাকলেও বড় ম্যাচে জ্বলে উঠতে পারেন তিনি।

এছাড়া এডের মিলিটাও আছেন রক্ষণভাগে, ক্যাসেমিরোর মতো অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার আছেন।

এসব মিলিয়ে থিয়াগো আলকান্তারা যদি শেষ পর্যন্ত মাঠে না নামতে পারেন সেটা লিভারপুলের জন্য একটা বড় ধাক্কাই হবে, কারণ মাঝমাঠে দখল নেয়াতে থিয়াগো অভিজ্ঞ ও চৌকষ।

এ খেলাটি কেবল ফুটবলারদেরই নয় কোচদেরও একটি লড়াই।

কার্লো আনচেলত্তি ও য়ুর্গেন ক্লপ- আধুনিক যুগের শীর্ষ দুই কোচ এই ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছেন।

অভিজ্ঞতায় আনচেলত্তি বেশ এগিয়ে। কিন্তু ম্যাচ জয়ের দিক থেকে ক্লপ খুব বেশি পিছিয়ে নন।

এখনো পর্যন্ত এই দুই কোচ ১০বার একে অপরের মুখোমুখি হয়েছেন।

তিনবার ক্লপের দল জয় পেয়েছে, চারবার কার্লো আনচেলত্তির দল।

আনচেলত্তির রেকর্ড আছে এসি মিলান ও রেয়াল মাদ্রিদকে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের।

দুই ক্লাবের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ইতিহাস
রিয়াল মাদ্রিদের ট্রফি ক্যাবিনেটে আছে ১৩টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা, যা সর্বোচ্চ। এখনো পর্যন্ত ১৬ বার এই টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠে মাত্র তিনবার শিরোপা নিতে ব্যর্থ হয়েছে ক্লাবটি।

লিভারপুলের আছে ছয়টি। এর আগে নয়বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল খেলেছে ইংলিশ ক্লাবটি।

রিয়াল মাদ্রিদ ও লিভারপুল এ নিয়ে তৃতীয়বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে।

১৯৮১ সালে লিভারপুল রিয়াল মাদ্রিদকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল।

২০১৮ সালে রিয়াল মাদ্রিদ ৩-১ গোলের জয় পেয়েছে।

এছাড়া আরো তিনবার মুখোমুখি হয়েছে এই দুই ক্লাব।

২০০৯ সালে লিভারপুল রিয়াল মাদ্রিদকে ৫-০ গোলে হারিয়েছিল দুই লেগ মিলিয়ে।

লিভারপুলকে ২০১৫ সালে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-০ গোলে জয় পেয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ।

গত বছর ২০২১ সালের কোয়ার্টার ফাইনালে লিভারপুলকে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল রেয়াল মাদ্রিদ।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এক বছর ব্যাপীয় আয়োজিত টুর্নামেন্ট যেখানে মূলপর্বে বিশ্বকাপের মতোই ৩২টি ক্লাব খেলে।

আগের মৌসুমে ইউরোপের শক্তিশালী ফুটবল খেলুড়ে দেশগুলোর পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ ক্লাবগুলো এই টুর্নামেন্টে সুযোগ পায়।

গ্রুপ পর্বের পরে দ্বিতীয় রাউন্ডে ১৬টি ক্লাব, কোয়ার্টার ফাইনালে আটটি ক্লাব, সেমিফাইনালে চারটি ক্লাব এবং ফাইনালে একটি ম্যাচে দুটি ক্লাব মুখোমুখি হয়।

সেমিফাইনাল পর্যন্ত এই টুর্নামেন্টে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে খেলা হয়, এই পদ্ধতির খেলাকে দুই লেগে খেলা বলে।

দুই লেগের খেলায় যদি সমতা থাকে তাহলে আগে অ্যাওয়ে গোলের ভিত্তিতে বিজয়ী দল নির্বাচিত হতো, এখন যে কোনো দলের পরের রাউন্ডে পৌঁছাতে বেশি গোল দিয়েই উঠতে হবে।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতলে পুরস্কার কী
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতলে শুরুতেই পরের মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে ক্লাবটি।

আর্থিক দিক বিবেচনা করলেও এটাও একটা বড় পাওয়া।

এছাড়া ফাইনালে ওঠার জন্যই কেবল রিয়াল মাদ্রিদ ও লিভারপুল এক কোটি ৭৫ লাখ ডলার করে পাবে।

ফাইনালে জয় পেলে ৫১ লাখ ডলার পাবে।

সূত্র : বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com