ছেলে পাবজি গেম ও ইনস্টাগ্রামে আসক্ত। বারবার বারণ করা সত্ত্বেও না শোনায় ছেলেকে মারধর করেন মা। আর এটাই কাল হল ওই মায়ের জন্য। ক্ষোভ থেকে মায়ের মাথায় গুলি করে খুন করল দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের লখনউ-এর পঞ্চমখেদা যমুনাপুরম কলোনিতে।
জিনিউজ, ইকোনমসিক টাইমস, ইন্ডিয়া টিভি নিউজ-সহ স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
জানা গেছে, নিহতের নাম সাধনা সিং (৪০)। খুন করার পর মায়ের মরদেহ তিন দিন ধরে ঘরের ভিতরেই লুকিয়ে রেখেছিল ১৬ বছরের কিশোর। পাশাপাশি ছোট বোনকে হুমকি দেয় যে, পুলিশ বা অন্য কাউকে এই বিষয়ে কিছু বললে সে তাকেও খুন করবে। মঙ্গলবার মৃতদেহে পচন ধরলে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করে। প্রতিবেশীরা পুলিশকে এই বিষয়ে জানালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এরপর পুলিশ ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জেরার মুখে নিজের দোষ স্বীকার করে।
এরপর পুলিশ নিহতের স্বামীকে পুরো ঘটনা জানায়। নিহতের স্বামী নবীন সিং সেনাবাহিনীর সুবেদার মেজর (জেসিও)। তিনি বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে কর্তব্যরত।
পুলিশ সূত্রে গেছে, শনিবার রাতে সাধনা দুই সন্তানকে নিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন। ভোর ৩টা নাগাদ ঘুম থেকে উঠে বাড়িতে থাকা নবীনের লাইসেন্সপ্রাপ্ত পিস্তল বের করে মায়ের মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায় অভিযুক্ত। এতে ঘটনাস্থলেই সাধনার মৃত্যু হয়। এরপরই ছোট বোনকে হুমকি দিয়ে অন্য ঘরে শোয়ার জন্য চলে যায় অভিযুক্ত।
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বোনকে আবারও হুমকি দেয় সে। অভিযুক্তের বোন পুলিশকে জানিয়েছে, এই দু’দিনে অভিযুক্ত বারবার মায়ের লাশের ঘরে যেত এবং দুর্গন্ধ যাতে না ছড়িয়ে পড়ে, সেজন্য সুগন্ধী ব্যবহার করত। কিন্তু মঙ্গলবার দুর্গন্ধ ছড়ালে অভিযুক্ত কিশোর তার বাবা নবীনকে ফোন করে বলে যে, মাকে কে বা কারা খুন করেছে এবং আততায়ীরা তাদের দুই ভাই-বোনকে ঘরে আটকে রেখেছে। এরপরই নবীন প্রতিবেশী দীনেশ তিওয়ারিকে ফোন করে খোঁজ নিতে বলেন। দীনেশই তাদের ঘরে এসে মরদেহ উদ্ধারের জন্য পুলিশকে খবর দেন।
পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত নাবালক জানিয়েছে যে, সে সবসময় পাবজি খেলতো বলে তার মা তাকে মারধর করত। এমনকি, ঘটনার দিন তাদের ঘর থেকে ১০ হাজার রুপি চুরি যাওয়ায় সেই দোষও তার ঘাড়ে এসে পড়ে। রুপি চুরি নিয়ে তার মা তাকে সন্দেহ করে এবং মারধর করে। এছাড়াও বাড়িতে কিছু হলে তার মা তাকেই মারধর করতো এবং শাসন করতো বলে সে পুলিশকে জানিয়েছে। কিন্তু শনিবার মায়ের কাছে মার খাওয়ার পরই অভিযুক্ত তার মা-কে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়।
মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে অভিযুক্ত নাবালককেও আটক করেছে পুলিশ। নিহতের স্বামী ইতোমধ্যেই আসানসোল থেকে লখনউ রওনা দিয়েছেন। সূত্র: ইকোনমিক টাইমস, ইন্ডিয়া টিভি নিউজ, জিনিউজ