যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের মেক্সিকো সীমান্তের কাছে ৪৬ অভিবাসনপ্রত্যাশীর লাশ পাওয়া সেই লরিতে কোনো খাবার পানি ছিল না বলে জানিয়েছেন সান আন্তোনিও শহরের দমকল বিভাগের প্রধান চার্লস হুড। তিনি আরও জানান, ‘লরিটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হলেও সেখানে দৃশ্যমান শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ’
বিবিসি, আল জাজিরাসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সান আন্তনিও শহরটি দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় মেক্সিকো সীমান্ত থেকে আড়াইশ কিলোমিটারের মধ্যে। ওই অঞ্চলে এখন তীব্র তাপদহ চলছে। গতকাল সোমবার সেখানে তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছিল।
চার্লস হুড বলেন, ‘স্থানীয় সময় সোমবার লরি খুলে অভিবাসনপ্রত্যাশী ৪৬ জনের লাশ দেখতে পাই যা আমরা ধারণাও করিনি। ১৬ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অনেকেই হিট স্ট্রোক করেন। সেখানে চারজন শিশুও আছে। তারা এখন ভালো আছে।’
অভিবাসনপ্রত্যাশীরা তীব্র তাপদাহ সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের সবার শরীর গরম ছিল। তারা তাপের কারণে ক্লান্তি ও অবসাদে ভুগছিলেন, বলেন দমকল বিভাগের প্রধান।
তিনি আরও বলেন, সেখানে ৬০ জন অগ্নিনির্বাপণ কর্মী, ২০টি ফায়ার ইঞ্জিন ও ২০টি চিকিৎসা ইউনিট নিয়ে ‘খুব দ্রুত’ কাজ করা হয় এবং জীবিত ১৬ জনকে এক ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
পুলিশ প্রধান উইলিয়াম ম্যাকম্যানস বলেন, শহরের একজন কর্মী গত সোমবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে চিৎকার করে কেঁদে পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক করেন। অফিসার সেখানে পৌঁছে একটি লাশ উদ্ধার করেন।
তিনি বলেন, লরিটি দক্ষিণের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে রেলওয়ের পাশে পাওয়া যায় এবং এই ঘটনায় তিনজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো ইব্রার্ড বলেন, অভিবাসনপ্রত্যাশীরা গরমে দম বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। এটি ‘টেক্সাস ট্র্যাজেডি’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সান আন্তনিওর মেয়র রন নিরেনবার্গ বলেন, ‘‘সোমবারের ঘটনাটি ‘ভয়ঙ্কর মানবিক ট্র্যাজেডি।’ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পরিবার ছিল এবং তারা ভালো জীবনের আশায় চেষ্টা করছিলেন। আমরা আশা করছি, এই ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হবে।’’
এর আগে ২০১৭ সালে সান আন্তনিওর ওয়ালমার্টে ট্রাকে আটকা পড়ে ১০ জন মানুষ মারা গিয়েছিল। তার আগে ২০০৩ সালে শহরের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ছুটে চলা একটি ট্রাক থেকে ১৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল।