যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের সিনেট মাইনরিটি লিডার এবং নিউইয়র্ক থেকে নির্বাচিত ডেমোক্রেট সিনেটর চাক শুমার বলেছেন, সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে বাংলাদেশিদের যুক্তরাষ্ট্রে আসার সুযোগ বাড়বে। তিনি বাংলাদেশিদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, আপনারা আমাকে সমর্থন দিন। আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশিরা ক্রমান্বয়ে সুসংহত হবেন। স্থানীয় সময় শনিবার রাতে নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সের একটি পার্টি হলে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন চাক শুমার।
বাংলাদেশি আমেরিকান নেতৃত্বাধীন ‘নিউ আমেরিকান ডেমোক্রেটিক ক্লাব’, ‘নিউ আমেরিকান ইয়ুথ ফোরাম’ এবং ‘নিউ আমেরিকান উইমেন্স ফোরাম’ আয়োজিত নবম বার্ষিক ডিনার অনুষ্ঠানে সিনেটর চাক শুমারকে বছরের সেরা সিনেটর অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর আনোয়ার হোসেন এবং ইয়ুথ ফোরামের প্রেসিডেন্ট আহনাফ আলমকে পাশে নিয়ে মোর্শেদ আলম সিনেটর শুমারকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন। অ্যাওয়ার্ড গ্রহণের পর তিনি বলেন, এই সম্মান আমাকে আরো অভিবাসন বান্ধব হতে উত্সাহিত করবে।
এই প্রথম কোনো ইউএস সিনেটর প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে সিনেটর চাক শুমারকে স্বাগত জানান যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং।
অনুষ্ঠানে সিনেটর চাক শুমার বাংলাদেশিদের প্রশংসা করে বলেন, আমার মত সকলেই আমেরিকায় এসেছেন নিজের ভাগ্য গড়তে। পাশাপাশি নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে তারা এই আমেরিকাকে গড়েছেন। আমি সবচেয়ে আনন্দিত যে বাংলাদেশিদের সন্তানেরা খুব ভালো রেজাল্ট দেখাচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। সে আলোকে আমি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতরাও একদিন হোয়াইট হাউজ এবং কংগ্রেসে আসন নিতে সক্ষম হবে।
সিনেটর শুমার উল্লেখ করেন, নিউইয়র্কের বাংলাদেশিদের আমি অভিবাদন জানাতে চাই, হোয়াইট হাউজের অথর্ব নেতৃত্ব পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আমেরিকাকে সঠিক ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধভাবে আমাকে সমর্থন দেয়ার জন্য। আমি বলতে চাই, আপনারাই হলেন আমেরিকার ভবিষ্যৎ। আমি অত্যন্ত গর্ববোধ করি, আমেরিকার যে কোন সিটি অথবা অঙ্গরাজ্যের চেয়ে নিউইয়র্কে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি বসতি গড়েছেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অ-আমেরিকান পদক্ষেপের প্রতি ইঙ্গিত করে সিনেটর শুমার অভিবাসী সমাজকে স্বস্তি দিয়ে বলেন, আমরা যদি সামনের নির্বাচনে সিনেটেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভে সক্ষম হই, তাহলে অভিবাসন আইন ঢেলে সাজাবো। আরো বেশি বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে আসার পথ সুগম হবে। কারণ আমি নিজেও অভিবাসনে বিশ্বাসী।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা ‘মুজিববর্ষ’ আলোকে বিস্তারিত অবহিত করেন তার বক্তব্যে। নানা কর্মসূচি গ্রহণের মধ্য দিয়ে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে দীপ্ত প্রত্যয়ে উন্নয়নের মহাসড়কে উঠেছে সেটি উল্লেখ করলে সিনেটর শুমার তাকে অভিনন্দিত করেন। কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা সিনেটরকে ধন্যবাদ জানান প্রবাসীদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করার জন্যে।
পল, নূসরাত এবং উদিসার উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন নিউ আমেরিকান ডেমোক্রেটিক ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা মোর্শেদ আলম, ইয়ুথ ফোরামের প্রেসিডেন্ট আহনাফ আলম এবং নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ আল আমিন। উইমেন ফোরামের পক্ষে বক্তব্য দেন নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট শিরিন কামাল এবং নির্বাহী পরিচালক রুমানা জেসমীন।
কমিউনিটিতে সাফল্যের জন্য বাংলাদেশি কয়েকজনকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয় আয়োজকদের পক্ষ থেকে। তাদের মধ্যে ছিলেন ‘বছরের সেরা বিজ্ঞানী’ হিসেবে ড. জিনাত নবী, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অপরিসীম অবদানের জন্যে মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ, বছরের সেরা বাংলাদেশি-আমেরিকান রাজনীতিক হিসেবে হেলালুল করিম, ‘নিউ আমেরিকান লিডার’ হিসেবে মো. শাহনেওয়াজ, এবং ‘নারী উদ্যোক্তা’ হিসেবে শায়লা আজিম প্রমুখকে।