লোকসানের অজুহাত তুলে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে গ্যাস বিক্রির দাবিতে গত শুক্রবার থেকে কুড়িগ্রামে ধর্মঘট পালন করছেন এলপিজির ডিলাররা। পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে এলপিজি বিক্রি বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকরা।
তবে জেলা প্রশাসন বলছে, ডিলারদের এমন দাবি অনৈতিক ও অযৌক্তিক। কোনোভাবে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে গ্যাস বিক্রির সুযোগ নেই। এটি লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গের শামিল।
এ বিষয়ে ওমেরা গ্যাস ডিলারের প্রতিনিধি মো. রুবেল জানান, সরকার নির্ধারিত মূল্যে সিলিন্ডার বিক্রি করলে তাদেরকে সিলিন্ডারপ্রতি অন্তত ৬০ টাকা লোকসান গুনতে হয়। আবার বেশি দামে সিলিন্ডার বিক্রি করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা দিতে হয়। গত বৃহস্পতিবার তাদের একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে বেশি দামে সিলিন্ডার বিক্রির অনুমতি চায়। জেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। ফলে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য সিলিন্ডার বিক্রি বন্ধ রেখেছেন।
মো. রুবেল বলেন, ‘আমরা তো লোকসান দিতে পারব না। পাশের জেলাগুলোতে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সিলিন্ডার বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা বিক্রি করলে জরিমানা দিতে হচ্ছে। এ জন্য আমরা বিক্রি বন্ধ রেখেছি। নতুন করে সিলিন্ডার তুলছি না।’
কুড়িগ্রামে যমুনা গ্যাসের ডিলার বদরুল আহসান মামুন বলেন, ‘আমাদের উপায় নেই। আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে মূল্য সমন্বয় করে গ্যাস বিক্রির অনুমতি চেয়েছি। কিন্তু তিনি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের বাইরে সিদ্ধান্ত দিতে রাজি হননি। সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে আমাকে অন্তত ৫০ টাকা বেশি দিয়ে গ্যাস কিনতে হয়। সে হিসাবে আমাদেরকে প্রতি সিলিন্ডার কমপক্ষে ১ হাজার ৩৯০ টাকায় বিক্রি করতে হয়। আমরা তো লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে পারব না। এ জন্য নতুন করে সিলিন্ডার তুলছি না, বিক্রিও করছি না।’
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘ডিলাররা আমার কাছে এসেছিলেন। আমি বলেছি সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রির অনুমতি দেওয়ার সুযোগ নেই। এ জন্য তারা যদি বিক্রি বন্ধ রাখেন, সেটা তো কোনো সমাধান নয়। তারা সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার শর্তে লাইসেন্স নিয়েছেন।’
সংকটের সমাধান সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে আমাদেরকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি প্রত্যাশা করব, ডিলাররা নির্ধারিত মূল্যে গ্যাস বিক্রি করবেন।’