নির্মাণকাজ শেষে যান চলাচলের জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত দেশের প্রথম ছয় লেনের কালনা সেতু। উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা এই সেতুর টোল নির্ধারণ করা হয়েছে সম্প্রতি।
সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, টোলের ক্ষেত্রে বড় ট্রেইলার ৫৬৫, তিন বা ততোধিক অ্যাক্সেল বিশিষ্ট ট্রাক ৪৫০, দুই অ্যাক্সেল বিশিষ্ট মিডিয়াম ট্রাক ২২৫, মিনি বা ছোট ট্রাক ১৭০, কৃষিকাজে ব্যবহৃত পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর ১৩৫, বড় বাস ২০৫, মিনিবাস বা কোস্টার ১১৫, মাইক্রোবাস, পিকআপ, কনভারশন জিপ ও রেন্ট এ-কার ৯০, প্রাইভেটকার ৫৫, টেম্পো, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, অটোভ্যান ও ব্যাটারিচালিত তিন চাকার যান ২৫, মোটরসাইকেল ১০ এবং রিকশা, ভ্যান ও বাইসাইকেল পাঁচ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সেতুটি উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছেন নড়াইল, গোপালগঞ্জ, যশোর, বেনাপোল, সাতক্ষীরা, খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলার কোটি কোটি মানুষ।’
সওজের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে কালনা সেতু।
সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, কালনা সেতু দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতু। ধনুকের মতো বাঁকা সেতু এটি। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার ও প্রস্থ ২৭ দশমিক ১ মিটার। উভয় পাশে ছয় লেনের সংযোগ সড়ক প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার। সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯৬০ কোটি টাকা। এশিয়ান হাইওয়ের ওপর অবস্থিত এটি।’
সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে সিলেটের তামাবিল হয়ে ঢাকা, ভাঙ্গা, নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, কলকাতা পর্যন্ত সরাসরি ভূমিকা রাখবে কালনা সেতু। এটি চালু হলে শুধু জাতীয় ক্ষেত্রে নয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখবে। এতে ভারত, কলকাতা, আসামসহ দেশের মধ্যে স্থলবন্দর বেনাপোল, সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর ও নোয়াপাড়া নদীবন্দরের মধ্যে রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে মাইলফলক রচিত হবে। নড়াইলের লোহাগড়ায় ইপিজেড চালুসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘কালনা সেতু’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কালনাঘাট থেকে ঢাকার দূরত্ব মাত্র ১০৮ কিলোমিটার। ফলে ঢাকার সঙ্গে নড়াইল, বেনাপোল, যশোর, খুলনাসহ আশপাশের সড়ক যোগাযোগে ১০০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যাবে।
তবে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হলেও ভাঙ্গা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত এ ধরনের সড়ক নির্মিত হয়নি। ফলে এক্সপ্রেসওয়ের সুফল পাচ্ছে না দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বড় একটি অংশ। ভাঙ্গা থেকে নড়াইল-যশোর-বেনাপোল পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক নির্মাণের বিষয়টি প্রকল্পাধীন বলে জানিয়েছেন কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক।