কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের এক সহ-সম্পাদকের ব্যক্তিগত আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার অপরাধে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ওই নেত্রী।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন খান নয়া দিগন্তকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গতকাল বুধবার কুষ্টিয়া মডেল থানায় এ মামলা করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার রিফাইতপুর এলাকার খলিলের ছেলে মো: হৃদয় (২৪), চুয়াডাঙ্গা শহরের আক্তারুজ্জামানের ছেলে মুহাইমিনুল মিরাজ (২৩), কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কালুপাড়া গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে রেফাউল ইসলাম (২২), দৌলতপুর থানার হালিম শিকদারের ছেলে শাকিল আহমেদ তুষার (২৮), ফারদিন সৃষ্টি (২২) ও কুমারখালী উপজেলার বড়ইচারা এলাকার সালামের ছেলে রাহাতুল ইসলাম (২১)।
এর মধ্যে তুষার জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, রেফাউল সাংগঠনিক সম্পাদক, ফারদিন সৃষ্টি সহ-সম্পাদক, রাহাতুল স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক সম্পাদক, হৃদয় সদস্য ও মিরাজ জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত।
বাদীর অভিযোগ, মামলায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জের নাম বাদ দিতে বাধ্য করেছেন পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আসামিরা নানা কৌশল অবলম্বন করে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের ওই নেত্রীর ব্যক্তিগত আপত্তিকর কিছু ছবি নিজ নিজ ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন। গত ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওই নেত্রী তার নিজ ফেসবুক আইডিতে ঢুকে ওই সব আপত্তিকর ছবি দেখতে পান।
ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেত্রীর দাবি, তাকে হেয়প্রতিপন্ন ও তার মানহানি করতে আসামিরা তার ব্যক্তিগত ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন খান জানান, ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন মোতাবেক ছয়জনের নামে একটি মামলা করেছেন জেলা ছাত্রলীগের এক নেত্রী। মামলাটি তদন্তধীন। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, বুধবার কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে শ্লীতাহানি, কুপ্রস্তাব ও হত্যার হুমকি দেয়ায় থানায় অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার না পেয়ে ছাত্রলীগ জেলা কমিটির ওই সহ-সম্পাদক সংবাদ সম্মেলনে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন।
এর আগে ওই ছাত্রলীগ নেত্রী সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। তাতে পুলিশ তেমন গুরুত্ব না দেয়ায় বুধবার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে পুলিশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে বাদ দিয়ে মামলা নেয়।
অন্যদিকে, বুধবার দুপুরে পাল্টাপাল্টি জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ নেত্রীর সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান চ্যালেঞ্জ।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতে চ্যালেঞ্জ বলেন, ছাত্রলীগের ঐক্য বিনষ্ট করতে একটি মহলের চক্রান্তে এসব মিথ্যা, ভিত্তিহীন কথা বলা হচ্ছে।