ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লায় আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ আজ সোমবার সকালে তার ফেসবুক পেজে সিত্রাং সম্পর্কে সর্বশেষ আপডেটে এই পূর্বাভাস দিয়েছেন।
তিনি তার পোস্টে লিখেছেন, আমেরিকার নৌবাহিনীর পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টারের বৈজ্ঞানিক ও আবহবিদ্যা ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের গতিপথের চিত্র তৈরী করেছে। সর্বশেষ চিত্র অনুসারে ঘূর্ণিঝড়টি বরিশাল বিভাগের জেলাগুলো ও চট্টগ্রাম বিাভগের চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা জেলার ওপর দিয়ে বাংলাদেশের অতিক্রম করার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি গতকাল রাত ১২টার সময় প্রায় ১৭ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৯ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করে শক্তিশালী হচ্ছিল।
পলাশ তার পোস্টে জানান, ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ প্রায় ৬৫ কিলোমিটার থেকে ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে উঠানামা করছে। ঘূর্ণিঝড়টি সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে স্থল ভাগে আঘাত করা শুরু করবে বলে আশঙ্কা করা যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূল থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরত্বে মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
সমুদ্রবন্দরে ৪ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত
এদিকে বার্তা সংস্থা ইউএনবির খবরে বলা হয়, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এ পরিণত হওয়ায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
সোমবার সকালে এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের নিকটবর্তী সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
গভীর নিম্নচাপ, অমাবস্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা এবং তাদের উপকূলবর্তী দ্বীপ ও চর এলাকা স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।