যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ফুড অ্যান্ড কালচার ফেস্টিভ্যাল। এ আয়োজনে মূল আকর্ষণ ছিলেন বাংলাদেশি-ব্রিটিশ সেলিব্রিটি শেফ টমি মিয়া। সাথে ছিলেন বাংলাদেশী-আমেরিকান সেলিব্রিটি শেফ মো. খলিলুর রহমান। গত ৬ নভেম্বর রোববার নিউইয়র্কে ওয়ার্ল্ড’স ফেয়ার মেরিনায় আয়োজিত এ উৎসবে টমি মিয়া উপস্থিত আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে সরাসরি চিকেন টিক্কা মাসালা তৈরি এবং পরিবেশন করেন। খাদ্যোৎসবে টমি মিয়ার আরেক পরিবেশনা ছিল কাটাবিহীন ইলিশ মাছের আইটেম। শেফ টমি মিয়াকে সার্বিক সহযোগিতা করেন খলিল বিরিয়ানীর স্বত্বাধিকারী শেফ মো. খলিলুর রহমান। এতে অভিভূত হন উপস্থিত অতিথিরা। এসব খাবারের ভূয়সী প্রশংসা করেন উপস্থিত বাংলাদেশি প্রবাসীরা। ফ্রেশ ফুড এন্ড বেভারেজের আয়োজনে অনুষ্ঠানটির টাইটেল স্পন্সর ছিল উৎসব গ্রুপ। যুক্তরাজ্য প্রবাসী শেফ টমি মিয়া ফেস্টিভ্যালের দু’দিন আগে লন্ডন থেকে নিউইয়র্কে আসেন। এ ইভেন্টে শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশির পাশাপাশি মূলধারার রাজনীতিবিদ এবং আমেরিকায় জন্ম নেয়া নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশিরাও অংশগ্রহণ করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক ফ্রেশ ফুড এন্ড বেভারেজের স্বত্বাধিকারী আল আমিন রাসেল। তিনি বলেন, উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশি খাদ্যের পরিচিতি তুলে ধরার জন্যই এ আয়োজন। এ অঞ্চলে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয়েছে বাংলাদেশি খাদ্যোৎসব। তিনি জানান, বাংলাদেশি খাদ্যকে বিদেশিদের কাছে পরিচিতি করতে আগামী বছর বেশ কয়েকটি ইভেন্ট করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, সিনেটর জন ল্যু, উৎসব গ্রুপের সিইও রায়হান জামান, সিভিল জজ সোমা সাঈদ, শেফ টমি মিয়া, শেফ মো. খলিলুর রহমান, টাইম টেলিভিশনের সিইও আবু তাহের, জান ফাহিম, ইসমাইল আহমেদ, এমরান ভূঁইয়া, মিসবাহ আবেদীন, মোহাম্মদ চৌধুরী প্রমুখ। বক্তারা বাংলাদেশি ফ্রেশ এবং হালাল খাদ্য সারা বিশ্বে জনপ্রিয় করার ওপর জোর দেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাদ্যের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র উপস্থাপন করেন ডা. প্রফেসর জিয়াউদ্দিন আহমেদ। শেফ টমি মিয়ার জীবনীর ওপরও প্রদর্শিত হয় একটি প্রামাণ্যচিত্র।
কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ধরণের ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশি খাদ্য পরিচিতি তুলে ধরার জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। বাংলাদেশি খাদ্যকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে টমি মিয়া যে প্রয়াস চালাচ্ছেন তা প্রশংসার দাবিদার। টমি মিয়ার মতো যুক্তরাষ্ট্রেও অনেকে আছেন। আমরা সবাই বাংলাদেশি খাদ্য ও কালচারের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন মানুষের সাথে বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় করতে পারি।
শেফ টমি মিয়া আগামী বছর নিউইয়র্কে পহেলা বৈশাখের আয়োজন করা হবে উল্লেখ করে জানান, তিনদিন ব্যাপী এ অনুষ্ঠানে পান্তা-ইলিশসহ বাংলাদেশি বিভিন্ন খাবার পরিবেশন করা হবে। তিনি জানান, তার অন্যতম আইটেম ফ্রাইড চিকেন বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। শুধু লন্ডনেই নয়, বাংলাদেশের ঢাকা, সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে এ ফ্রাইড চিকেন। যুক্তরাষ্ট্রেও এ আইটেমের চাহিদা রয়েছে।
শেফ মো. খলিলুর রহমান জানান, বিরিয়ানীসহ বাংলাদেশি বিভিন্ন খাদ্য প্রমোট করতে তিনি নিউইয়র্কে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বাংলাদেশে শেফ প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন করার ব্যাপারে সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে কবিতা ও নৃত্য পরিবেশন করে এ প্রজন্মের শিশু কাব্য। এছাড়া শেষ পর্বে প্রবাসী বাংলাদেশি শিল্পীরা মনোমুগ্ধকর সঙ্গীত পরিবেশন করেন।