ফরিদপুরে বিএনপির সমাবেশের আগের দিন থেকেই মাঠে অবস্থান নিয়ে রয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। শহরের ছয় কিলোমিটার দূরে সমাবেশস্থল আব্দুল আজিজ ইন্সটিটিউট মাঠে বৃহস্পতিবার থেকেই বিএনপির নেতাকর্মীরা ভিড় করতে শুরু করেন। তাদের অনেকে রাতে সেখানে অবস্থান করেন।
এর আগে বিএনপির কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ নেতারা শুক্রবার ফরিদপুরে পৌঁছান। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতারা রাতে সমাবেশস্থলে যান।
আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশজুড়ে বিএনপি যে সমাবেশ কর্মসূচি শুরু করেছে, এটি তার ষষ্ঠ সমাবেশ।
মূলত নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন, গুম ও খুনের প্রতিবাদ, দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তি ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশের ফেরার সুযোগ তৈরির জন্য সব মামলা প্রত্যাহারসহ নানা দাবিতে দলটি এ সমাবেশের এ ধারাবাহিক কর্মসূচি শুরু করেছে। এটি শেষ হবে ঢাকার সমাবেশের মধ্য দিয়ে।
এর আগে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর ও বরিশালে সমাবেশ করেছে দলটি।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফরিদপুর সমাবেশের সমন্বয়ক শামা ওবায়েদ গণমাধ্যমকে বলছেন, সমাবেশে লক্ষাধিক লোক হবে বলে তারা আশা করছেন।
ফরিদপুর বিভাগের পাঁচ জেলা ছাড়াও আশপাশের অন্যসব জেলা থেকেও মানুষ এসে সমাবেশে অংশ নিচ্ছে।
বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা আকবর হোসেন জানাচ্ছেন, ফরিদপুরকে বিএনপি তাদের সাংগঠনিক বিভাগ হিসাবে বিবেচনা করে। শনিবারের সমাবেশে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাগুরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, এসব জেলা থেকে লোকজন আসবে।
তবে আগের সমাবেশগুলোর মতো এখানেও আগে স্থানীয়ভাবে পরিবহন ধর্মঘট হয়েছে। আগের মতোই মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধের কারণ দেখিয়ে ধর্মঘট ডেকে বাস ও মিনিবাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে সারা দেশের সাথে ফরিদপুরের যোগাযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।
ফরিদপুর থেকে স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, শনিবার সকাল ৮টা থেকেই শহরে কোনোরকম ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। মোবাইল বা ব্রডব্যান্ড, কোথাও ইন্টারনেট সেবা নেই।
শুক্রবার বিকেলের মধ্যেই কোমরপুরের ওই সমাবেশ স্থলে অসংখ্য নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। তারা সেখানে খণ্ড খণ্ড মিছিল করছেন। সব মিলিয়ে সেখানে একটি উৎসবের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
তবে বিএনপির নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, সমাবেশ কেন্দ্র করে পুলিশ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে।
শামা ওবায়েদ অভিযোগ করেন, নেতা-কর্মীদের আসতে পথে পথে পুলিশ বাধা দিচ্ছে। আমাদের নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি অভিযান চালাচ্ছে। এর মধ্যেই কয়েকজনকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে পুলিশ।
তবে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজাহান বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, আমরা তো নিয়মিত কাজ করেই কূল পাই না, তাদের হয়রানি করবো কীভাবে? এরকম কোনো কিছুই আমরা করছি না। আমাদের কার্যক্রম যেগুলো চলছে, সেগুলো নিয়মিত মামলা, ওয়ারেন্টের মামলার আসামির বিরুদ্ধে, তার বাইরে কিছু না।
সূত্র : বিবিসি