নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হলো ‘পঞ্চম হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্মেলন’। ১১ ডিসেম্বর নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকায় একটি পাবলিক স্কুলে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনের আয়োজন করে ‘শোটাইম মিউজিক’। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রবাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ও কবি বেলাল বেগ।
এ সময় বেলাল বেগ বলেন, মানুষকে আকর্ষণ করার অসম্ভব এক ক্ষমতা নিয়ে জন্মেছিলেন লেখক হুমায়ূন আহমেদ, যিনি ছিলেন একজন জাদুকর। তার লেখায়, তার ব্যক্তিত্বে, সর্বোপরি তার কাজে তিনি অনন্তকাল বেঁচে থাকবেন।
অপর বক্তারা বলেন, লেখক হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের অন্যতম। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার, গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। অন্য দিকে তিনি আধুনিক বাংলা বৈজ্ঞানিক কল্প-কাহিনীর পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও তিনি সমাদৃত। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিন শতাধিক। তার বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত। মিসির আলি এবং হিমু তার সৃষ্ট অন্যতম দুটি জনপ্রিয় চরিত্র।
প্রবাসে বসবাসরত কবি ও লেখকদের প্রকাশিত বই সমূহ প্রদর্শন করা হয় এ সম্মেলনে। বই বিনিময়, প্রদর্শন ও বিক্রয় অনুষ্ঠান সকলে উপভোগ করেছেন। অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্বে ছিল চিত্রাঙ্কন, গানে গানে হুমায়ূন, মুক্ত আলোচনা: লেখকের ভাবনায় হুমায়ূন, হুমায়ূন সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বদেশ প্রেম, আবৃত্তি, আমার আছে জল, হুমায়ূন স্মৃতিচারণ এবং গল্পে গল্পে হুমায়ূুন।
সম্মেলনে নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যাঞ্জলি শিল্পী গোষ্ঠী। সঙ্গীত পরিবেশন করেন জনপ্রিয় শিল্পী এস আই টুটুল এবং সেলিম চৌধুরী, সেলিম ইব্রাহীমসহ অনেকে। সমবেত সংগীত পরিচালনায় ছিলেন-চন্দন চৌধুরী। এতে অংশ নেন হুমায়ূন ভক্ত সকলে।
চিত্রাঙ্কন পরিচালনায় ফারজিন রাকীবা ও আবু সাঈদ রতন, সহযোগিতায় ছিলেন ড. হাফসা সিদ্দীকা, আলমা ফেরদৌসী লিয়া, খালেদ সরফুদ্দীন, সুমন শামসুদ্দীন ও শিবলী সাদিক।
মুক্ত আলোচনা পর্বে লেখকের ভাবনায় হুমায়ূন, পরিচালনায় ছিলেন রওশন হাসান ও শারমিন রেজা ইভা। এ পর্বে অংশ নেন প্রবাসে বসবাসরত কবি ও লেখকবৃন্দ। হুমায়ূুন সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বদেশ প্রেম,পরিচালনায় ছিলেন মোশাররফ হোসাইন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বেলাল বেগ, অধ্যাপিকা হোসনে আরা, তমিজউদ্দীন লোদী, ফকির ইলিয়াস, ফাহিম রেজা নূর ও ড. মহসিন আলী।
‘আমার আছে জল’ নিয়ে আলোচনা পর্ব পরিচালনায় ছিলেন জি এইচ আরজু ও সাবিনা নিরু। অংশ নেন কবি তমিজউদ্দিন লোদী, শামস আল মমিন, সোনিয়া কাদের, আনোয়ার সেলিম, লায়লা ফারজানা। কবিতা আবৃত্তি করেন আনোয়ারুল লাভলু, নজরুল কবির, নাশ নাসরিন, আহসান হাবিব, পিংকি চৌধুরী ও নীলুফার যারীন ও সিনহা মনসুর।
হুমায়ুন আহমেদের রচনা নিয়ে স্মৃতিচারণ পর্বের পরিচালনায় ছিলেন ছন্দা সুলতান। অংশগ্রহনে: আবু রায়হান, রওশন হাসান, এ বি এম সালেহ উদ্দিন। নৃত্যাঞ্জলি পরিচালনায় ছিলেন চন্দ্রা ব্যানার্জী ও তার দল। ‘গল্পে গল্পে হুমায়ূন’ পর্বটি পরিচালনায় ছিলেন মনজুর কাদের ও শিশুরা।
হুমায়ূন স্মৃতিচারণ পর্ব পরিচালনায় ছিলেন এ বি এম সালেহ উদ্দিন। অংশগ্রহণে ছিলেন বেলাল বেগ, শারমিন রেজা ইভা, শামীম শাহেদ।
আগামী জুনের ৩-৪ তারিখ দু’দিনব্যাপী আরও বর্ধিত পরিসরে হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা করেন হোস্ট সংগঠন ‘শোটাইম মিউজিক’র স্বত্বাধিকারী আলমগীর খান আলম।