আগামী তিন দিনের মধ্যে নিজ উদ্যোগে ঢাকা উত্তরের সব পোস্টার সরাবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নবনির্বাচিত মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি এসব পোস্টার না পোড়ানোর জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
রোববার বিকেলে বনানীতে নির্বাচন–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান আতিকুল ইসলাম। আজ তার নির্বাচনী কার্যালয়ে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ এসে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
আতিকুল ইসলাম বলেন, আগামী তিন দিনের মধ্যে উত্তরের সব পোস্টার সরানো হবে। লেমিনেটিং আর পলিথিনে মোড়ানো পোস্টারগুলো রিসাইকেল করা হবে। কোনো পোস্টারকে মাটিতে ফেলে রাখা হবে না। যারা রিসাইকেল করবে তারা বলেছে, কাগজগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করে আলাদা করবে এবং পলিথিনগুলো আলাদা করে রিসাইকেল করবে।
আজও বেশ কিছু জায়গায় পোস্টার নামিয়ে ফেলা হয়েছে উল্লেখ করে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস, আগামী তিন দিনের মধ্যে ঢাকা উত্তর থেকে সব পোস্টার নামিয়ে ফেলা যাবে।’ এ কাজে সবার সহযোগিতা চান তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে আতিকুল ইসলাম বলেন, যাঁরা এগুলো লাগিয়েছেন, সেসব প্রার্থীকেও পোস্টার সরানোর দায়িত্ব নিতে হবে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও দুটি দল এ কাজ করছে। সিটি করপোরেশনও পোস্টার সরাচ্ছে। এবার খুব দ্রুত পোস্টার সরে যাবে।
আতিকুল ইসলাম একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য প্রতিপক্ষ বিএনপির প্রতি ধন্যবাদ জানান। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে মনে করে তিনি। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটির এ নির্বাচনে যাঁরা সহযোগিতা করেছেন, তাদের সবাইকে তিনি ধন্যবাদ জানান।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই অপরিকল্পিত শহরকে পরিকল্পিত করার জন্য সবার সহযোগিতা চাই। গত নয় মাস কঠিন অনুশীলন করেছি। আমার বিভিন্ন প্রচারে বলেছি আমাকে আবার সুযোগ দেওয়ার জন্য। জনগণ আমাকে সেই সুযোগ দিয়েছেন। এ কাজে যারা যে ক্ষেত্রে পারদর্শী, তাদের নিয়ে ঢাকার সমস্যার সমাধান করব। এটি একলা চলার পথ নয়; সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলার পথ।’
আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘এখানে বহুমুখী সমস্যা। যানজট, জলজট, বায়ুদূষণ এবং এডিস মশার মৌসুম শুরু হয়ে যাচ্ছে। আর ঢাকা উত্তরের প্রথম নির্বাচিত ও প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের অসমাপ্ত কাজ শেষ করা হবে আমার অন্যতম একটি প্রধান কাজ। তিনি ইউলুপ করতে চেয়েছেন। এগুলো শেষ করতে হবে। ঢাকার যেসব জায়গা অন্ধকার হয়ে আছে, সেগুলোতে এলইডি বাতি লাগানো হবে। বিশেষ করে ঢাকা সিটি করপোরেশনের নতুন ১৮টি ওয়ার্ডকে অতি দ্রুত কীভাবে আধুনিকায়ন করতে পারি, সে জন্য আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে। এ নিয়ে স্থানীয় সরকার ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে কাজ হয়েছে। এখন একনেক ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর কাজ শুরু হবে।’ মেয়র বলেন, ‘নির্বাচনী স্লোগান ‘সবাই মিলে সবার ঢাকা’ গড়ে তোলার কাজ করব। এ কাজে চ্যালেঞ্জ থাকবে।’ সবাইকে নিয়ে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা হবে বলে তিনি বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত উত্তর সিটির আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক তোফায়েল আহমেদ বলেন, তৃণমূল থেকে একটি দল ঐক্যবদ্ধ থাকলে জয়লাভ করতে পারে। আওয়ামী লীগ জেতার জন্য নির্বাচনে অংশ নিয়েছে বলে জিতেছে। কিন্তু বিএনপি জিততে অংশ নেয়নি। একে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অংশ নিয়েছে। তারা আন্দোলনের অংশ হিসেবে অংশ নিয়েছে বললেও হেরে গিয়ে একসাথে দুটি পরাজয়ের গ্লানি নিল।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিম, ঢাকা–১৩ আসনের সাংসদ সাদেক খান, ঢাকা–১৪ আসনের সাংসদ আসলামুল হক, ঢাকা–১৭ আসনের সাংসদ আকবর হোসেন খান পাঠান, ঢাকা–১১ আসনের সাংসদ রহমতুল্লাহ, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজসহ আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।