বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় চুরির অপবাদ দিয়ে মাহতাব (১৪) নামে এক কিশোরকে পিটিয়ে জখম করেছে সহোদর। পরে ঘটনাটি স্থানীয় প্রভাবশালীদের নিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন ওই দুইজন।
রোববার (২ ফেরুয়ারি) বিকেলে উপজেলার হাতেমপুর গ্রামের হাতেমপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। তবে এখন পর্যন্ত কিশোরটির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো মামলা করা হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, রোববার বিকেলে উপজেলার হাতেমপুর বাজারের খালেকের দোকানের ভেতর থেকে মাহতাবকে চোর সন্দেহে আটক করা হয়। পরে তাকে রশি দিয়ে বেঁধে দোকানি খালেক ও তার ছোটো ভাই সালেহ এবং অপর এক দোকানদার রাজা মল্লিক মাহতাবকে মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে ওই তিনজন তাকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
পরে গুরুতর অবস্থায় স্থানীয় গ্রাম পুলিশকে খবর দিলে গ্রাম পুলিশ পাথরঘাটা থানায় বিষয়টি জানায়। পাথরঘাটা থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মোশাররফ ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
চিকিৎসাধীন মাহতাব জানায়, সে চুরি করেনি। প্রায়ই বাজারে ঘোরাফেরা করে। তাকে অন্যায়ভাবে মারধর করেছে বলে দাবি করে সে। মাহতার আরো জানায়, তার হাতে পায়ে দোকানদার সালেহ কামড় দিয়ে কেটে দিয়েছে।
আহত মাহতাবের মামা মো. ইব্রাহিম বলেন, পারিবারিক কলহের কারণে ৩ মাসের মাহতাবকে রেখে ওর বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়। পরে মাহতাবের মা-বাবা দুজনেই অন্যত্র বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। ফলে পিতৃমাতৃহীন অনাথ জীবনযাপন শুরু হয় মাহতাবের। ছোট থেকে আমাদের কাছেই বড় হয়েছে। ক্ষেত-খামারে শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে সে। মাহতাবকে অন্যায়ভাবে চোর সাব্যস্ত করে মারধর করা হয়েছে।
পাথরঘাটা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাবুদ্দিন জানান, মাহতাব মূলত ছিন্নমূল শিশু। মা-বাবার আদর, স্নেহবঞ্চিত ছন্নছাড়া জীবনযাপন করে সে। তাকে পুলিশের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে অভিযুক্ত সালেহ ও খালেকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদের পাওয়া যায়নি।