গর্ভপাত ( ABORTION ) হলো কোন ফিটাস বা ভ্রূণ নিজে নিজে বেঁচে থাকতে সক্ষম হওয়ার আগেই এটিকে অপসারণ করে অথবা মাতৃগর্ভ থেকে জোরপূর্বক বের করে দিয়ে গর্ভধারণের অবসান ঘটানো। গর্ভপাত যদি ইচ্ছাকৃতভাবে হয়ে থাকে, কোনো ধরনের কারণ যদি এর মধ্যে না থাকে তাহলে এটি হারাম। এটি যে কোন অবস্থায় বা যত দিনের হোক না কেন। কারণ যেহেতু একটি বিষয় নিশ্চিত হওয়ার পরে সেটাকে ধ্বংস করা হয়েছে। আমাদের সমাজে খুব সহজেই এই ভয়ানক রকমের কাজটি অকপটে করে যাচ্ছে। অনেক স্বামী স্ত্রী বিয়ের পর, এখনই সন্তান নিবেন না বলে পারিবারিক জীবনে যখনই ইচ্ছের বাইরে সন্তান গর্ভে চলে আসে তখনই শুরু হয়ে যায় অস্থিরতা, ডাক্তারের কাছে যেয়ে গর্ভপাত করিয়ে আসেন। মুসলিম, হিন্দু , খ্রিষ্টান সহ সব ধর্মেই মানব হত্যা নিষেধ বা হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ পৃথিবীতে কোন শিশুকে পাঠাবেন তা পরিকল্পনা করে রেখেছেন। এর জন্য সুস্থ সুন্দর নিরাপদ ব্যবস্থপনাও দিয়েছেন। এখানে স্বামী স্ত্রীকেও মনে রাখতে হবে যে, সন্তান নিজেরা নেওয়ার বা না নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন না বরং মহান আল্লাহ যিনি একমাত্র ক্ষমতার অধিকারী সেই সৃষ্টিকর্তা যাকে চাইবেন তাকেই দান করবেন। যাকে সন্তান দিতে চাইবেন না তাকে দেবেন না। অনেকেই সন্তানকে খাওয়াতে পড়াতে পারবে না , মানুষ করতে পারবে না ইত্যাদি কথা ভেবে সন্তান নেয় না, আবার এই কথা ভেবে অনেকে গর্ভের সন্তানকে নষ্ট বা গর্ভপাত করে ফেলে। অথচ এই বিষয়টি সুস্পষ্ট করে প্রতিটি ধর্মেই বলেছে , আমি দুনিয়াতে তোমাদের জন্যও রিজিকের ব্যবস্থা করেছি এবং তাদের জন্যও যাদের রিজিকদাতা তোমরা নও, এমন কোন বস্ত নেই যার ভান্ডার আমার কাছে নেই, যার থেকে আমি এক পরিকল্পিত হিসাব অনুসারে বিভিন্ন সময়ে রিজিক দিয়ে থাকি। আমেরিকাতে গর্ভপাত ছিল সবার জন্য ওপেন। যে কেউ গর্ভপাত করাতে পারে, কোন ভেদাভেদ ছিল না। ২০২২ সালে নতুন আইন করে কেউ গর্ভপাত করাতে পারবে না। এই আইনের কারনে আমেরিকান মেয়েরা যতটুকু বিপদে পড়ছে তারচেয়ে তিনগুন বেশী বিপদে পড়েছে বাংলাদেশী মহিলারা। কারণ আমেরিকান মেয়ের গর্ভপাত না করাতে পারলে তাঁরা বাচ্চা নিয়ে নেয় এবং নির্ভয়ে জন্মদাতা পিতার নাম বলে দেয়। সমস্যা হল বাংলাদেশী মহিলারা স্বামী ছাড়া অন্য কারো সাথে সম্পর্ক করতে পারে কিন্তু বাচ্চা নেবার মতো এখনো সাহস অর্জন করতে পারে নাই। যদিও তাঁরা প্রেমের সময় বলতে পারে তোমাকে ছাড়া বাঁচব না, তোমাকে সারাজীবন ভালোবেসে যাব, তুমি আমার জীবন, তুমি আমার মরণ ইত্যাদি ইত্যাদি যতসব ভালোবাসার কথা। আর যদি একবার কোনমতে পেটে বাচ্চা চলে আসে তখন দেখা যায় বাংলাদেশী মহিলাদের অবস্থা। তখন বলতে শুনা যায় এই বাচ্চার চেহারা কার মতো হবে, ছেলে হবে না মেয়ে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। আমেরিকার গর্ভপাত আইনের পর থেকেই অনেক বাংলাদেশী মহিলা পেট ব্যথা, বুক ব্যথা, বুমি করে, মাথা ঘুড়ায়, গলা ব্যথা , সহ নানা কারণ বলে দেশে যাইতেছে কবিরাজ দেখানোর জন্য। কমিউনিটিতে বলতে শুনি আসলেই তাঁরা কবিরাজ দেখাতে যায় নাই ,তাঁরা গিয়েছে গর্ভপাত করাতে। এইগুলো কথার কথা সত্য মিথ্যা যাচাই করার দরকার নেই। তবে এই দুনিয়াতে যতগুলো ধর্ম আছে আমার মনে হয় সব ধর্মেই বলেছে ” মানব হত্যা করা মহা অপরাধ”।
এ জাতীয় আরো খবর..