বিপিএলে শোয়েব মালিক ঝড়ে উড়ে গেল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। বয়সকে শুধুই সংখ্যা বানিয়ে ফেলা এই পাকিস্তানি অলরাউন্ডারের ব্যাটে ভর করে জয়ের ধারায় ফিরলো রংপুর রাইডার্স।
এদিকে মিরপুরের এ ম্যাচে আজ পুরো ২০ ওভারও খেলতে পারেনি চট্টগ্রাম। রংপুরের দেয়া ১৮০ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ২১ বল বাকি থাকতেই মাত্র ১২৪ রানে অলআউট হয়ে যায় বন্দরনগরীর দলটি। ফলে ৫৫ রানের বড় ব্যবধানে হেরে মাঠ ছাড়ে তারা। বৃথা গেছে অধিনায়ক শুভাগত হোমের ঝড়ো ফিফটি।
রংপুরের ছুড়ে দেয়া বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা একদমই ভালো হয়নি চট্টগ্রামের। মাত্র ১১ রানেই হারিয়ে ফেলে ৩ উইকেট। প্রথম ওভারেই রাকিবুল হাসানের শিকার হন উসমান খান, ৪ রান করে আউট হন এবারের বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান। পরের ওভারে ৪ বলে ০ করে আউট হন তুষার খান। ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভার করতে এসে এবার আউট করেন খাজা নাফেকে, ৬ রান আসে এই পাকিস্তানি তরুণের ব্যাটে।
তবে এরপরই চট্টগ্রামকে ম্যাচে ফেরান অধিনায়ক শুভাগত হোম। দরবেশ রাসুলিকে নিয়ে গড়ে তোলেন ৪০ বলে ৬৬ রানের জুটি। দলীয় ৯.২ ওভারে রাসুলি ১৭ বলে ২১ করে আউট হলে ভাঙে এই জুটি। তবে তখনো এক প্রান্ত আগলে রেখে আগ্রাসী ক্রিকেট উপহার দিতে থাকেন শুভাগত হোম। এবার শুভাগতকে দর্শক বানিয়ে দেখা যায় জিয়া ‘শো’। মাঠে নেমেই ব্যাট চালাতে থাকেন জিয়া। ১২তম ওভারে আউট হবার আগে জিয়া করেন ১ চার ৩ ছক্কায় ১২ বলে ২৪ রান।
জিয়া আউট হতেই ধাক্কা খায় চট্টগ্রাম। দলের সেরা ব্যাটার আফিফ হোসেন অজানা কারণে ব্যাটিংয়ে নামেননি। ফলে সঙ্গহীন হয়ে পড়েন শুভাগত। এরই মাঝে তুলে নেন মাত্র ২৮ বলে অর্ধশতক। তবে এরপর ইনিংসটা আর বড় হয়নি, ৪ চার আর ৪ ছক্কায় ৩১ বলে ৫২ করেই ফিরেন চট্টলার অধিনায়ক। সেখানেই মূলত শেষ হয়ে যায় চট্টগ্রামের জয়ের স্বপ্ন।
শেষ পর্যন্ত ১৬.৩ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৪ রানেই শেষ হয় চট্টগ্রামের ইনিংস। শেষ ২ রানেই ৩ উইকেট হারায় দলটি। মৃত্যুঞ্জয়, মেহেদী রানা কিংবা তাইজুল ইসলাম; কেউ পারেননি দুই অংকের ঘরে যেতে।
রংপুরের হয়ে হারিস রউফ ১৭ রানে ৩ এবং রাকিবুল হাসান শিকার করেন ২৪ রানে ২ উইকেট।
টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শোয়েব মালিকের ৭৫ রানে ভর করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৯ রান সংগ্রহ করে রংপুর। শোয়েব মালিক ছাড়াও এদিন জ্বলে উঠেন আজমতুল্লাজ ওমরজাই। দুজনে মিলে চতুর্থ উইকেট জুটিতে যোগ করে ১০৫ রান।
এদিন চোট কাটিয়ে দলের সাথে যোগ দেন নুরুল হাসান সোহান, বুঝে নেন রংপুরের অধিনায়কত্বও। রনি তালুকদার একাদশ থেকে বাদ পড়ায় নাইম শেখের সাথে এদিন ইনিংস উদ্বোধন করতে আসেন শেখ মেহেদী, তবে মাত্র ৩ বলেই শেষ হয় তার লড়াই। প্রথম ওভারেই ১ রান করেই শুভাগতর শিকার হন মেহেদী।
ওয়ানডাউনে নেমে পারভেজ ইমনও দলকে স্বস্তি দিতে পারেননি, ৫ ওভার শেষে আউট হওয়ার আগে করেন ১০ বলে মাত্র ৬ রান। ওদিকে আরেক ওপেনার নাইম শেখ এদিন শুরুটা ভালোই করেছিলেন, তবে বড় হয়নি তার ইনিংস। ২৯ বলে ৩৫ রান করেন নাইম।
এরপরই ইনিংসের হাল ধরেন শোয়েব মালিক, যোগ্য সঙ্গ দেন পাঁচ নম্বরে নামা আজমতুল্লাজ ওমরজাই।
মালিক-ওমরজাইয়ের ৫৬ বলের জুটিতে আসে ১০৫ রান। ৪ ছক্কা আর ১ চারে ২৪ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলেন ওমরজাই। ১৭.১ ওভারে যখন ওমরজাই আউট হন, দলের রান তখন ৪ উইকেটে ১৫২ রান। এরপর মোহাম্মদ নাওয়াজের সাথে ১৮ রানের জুটি গড়েন শোয়েব মালিক। নাওয়াজ ৮ বলে ৯ করে আউট হন। ছয়ে নেমে শামিম পাটোয়ারী করেন ৩ বলে ৭ রান।
শোয়েব মালিক অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন। শেষ পর্যন্ত তার ব্যাটে আসে ৪৫ বলে ৫ চার আর ৫ ছক্কায় ৭৫ রান।
চট্টগ্রামের হয়ে ৩৯ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন মেহেদী হাসান রানা, অধিনায়ক শুভাগত হোম শিকার করেন মাত্র ১৩ রানে ২ উইকেট।
আজকের এ জয়ের ফলে ছয় ম্যাচ খেলে তিনটিতে জয় পাওয়া রংপুর উঠে এসেছে পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বরে। আর সাত ম্যাচ খেলা চট্টগ্রামের অবস্থান ৬-এ। তারা জয় পেয়েছে মাত্র দুটিতে।