শেষ ওভারে জয়ের জন্য খুলনার প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। জোড়া চার হাঁকিয়ে ইয়াসির আলি ভালো কিছুর আভাস দিলেও শেষ পর্যন্ত আর সমীকরণ মেলেনি। মোসাদ্দেকের করা শেষ ওভারে মাত্র ১২ রান সংগ্রহ করতে পারে খুলনা টাইগার্স। ফলে ৪ রানের রুদ্ধশ্বাস জয় পায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এই জয়ে এবারের বিপিএলে তৃতীয় দল হিসেবে টানা ৫ ম্যাচে জয়ের স্বাদ পেল কুমিল্লা।
শনিবার দিনের প্রথম ম্যাচে কুমিল্লার দেয়া ১৬৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৪ রানেই তামিমকে হারায় খুলনা টাইগার্স। ১০ বলে ১১ রান করে নাসিম শাহের শিকার হন তিনি। তবে আসরে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা এন্ড্রু বালবির্নির ব্যাট জয়ের পথেই হাঁটতে থাকে খুলনা। শাইহোপকে সাথে নিয়ে ৪৯ রান যোগ করেন তিনি। বালবির্নি ৩১ বলে ৩৮ রান করে আউট হলে ভাঙে এই জুটি।
চার নাম্বারে ব্যাট করতে নেমে আগ্রাসী মেজাজে ব্যাটিং করতে থাকেন মাহমুদুল হাসান জয়। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন শাইহোপ। ২১ বলে দুজনে মিলে যোগ করেন ৪৩ রান। ইনিংস বড় করতে পারেননি জয়, মোসাদ্দেকের শিকার হয়ে ফেরার আগে করেন ১৩ বলে ২৬ রান। দলের অবস্থা তখন বেশ সন্তোষজনক, ১২.৫ ওভারে ৩ উইকেটে ১০৫ রান।
তবে জয় ফিরলেই ধাক্কা খায় খুলনা, দ্রুত হারিয়ে ফেলে আরো দুটি উইকেট। আজম খান ২ বলে ১ ও ১০ বলে ৮ রানে ফেরেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দীন। তবে তখনো মাঠে ছিলেন শাইহোপ। তাকে সাথে নিয়ে ইনিংসের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার চেষ্টা করেন অধিনায়ক ইয়াসির আলী। দুজনে মিলে যোগ করেন ২৪ রান। দুই ওভারে তখন জয়ের জন্য প্রয়োজন ২৫ রান।
১৯তম ওভারের প্রথম বলে নাসিম শাহ শাইহোপকে ফেরালে বিপদে পড়ে খুলনা। একপর্যায়ে শেষ ওভারে জয়ের জন্য তাদের প্রয়োজন হয় ১৭ রান। মোসাদ্দেকের করা শেষ ওভারের প্রথম ২ বলে মাত্র ১ রান আসলেও পরপর দুই বলে ইয়াসির আলি ২ চার হাঁকালে শেষ দুই বলে প্রয়োজন হয় ৮ রান। তবে সেই সমীকরণ মেলাতে পারেনি ইয়াসির আলী, ৩ রান করতে পারেন শেষ দুই বলে। ফলে জয়ের খুব কাছে গিয়েও হারতে হলো খুলনা টাইগার্সকে।
এর আগে উইকেট ধরে রেখেও বড় সংগ্রহ পেতে ব্যর্থ হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। মাত্র ২ উইকেট হারালেও ১৬৫ রানেই থেমেছে তাদের ইনিংস। কুমিল্লার হয়ে অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন লিটন কুমার দাস ও মোহাম্মদ রিজওয়ান।
এইদিন টস হেরে ব্যাট করতে নেমে কুমিল্লাকে দারুণ শুরু এনে দেন উদ্বোধনী জুটি। লিটন দাস আর মোহাম্মদ রিজওয়ান মিলে যোগ করেন ৬৫ রান। তবে আসরের দ্বিতীয় অর্ধশতক ছুঁয়ে বিদায় নেন লিটন দাস। রান পেলেও স্বরূপে ছিলেন না লিটন, ৯ চারে ৪২ বলে ৫০ রান করে আউট হন তিনি।
দলের রানের গতি বাড়ানোর দায়িত্বটা নিয়ে নেন ওয়ানডাউনে নামা জনসন চার্লস। রিজওয়ানের সাথে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৩৯ বলে ৬০ রান। জুটি ভাঙে চার্লস ২২ বলে ৫ ছক্কায় ৩৯ করে বিদায় নিলে। তবে তখনো একপ্রান্ত আগলে খেলতে থাকেন রিজওয়ান।
১৯তম ওভারে এসে অর্ধশতক তুলে নেন রিজওয়ানও, ৪২ বলে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৪৭ বলে ৫৪ রানে অপরাজিত ছিলেন রিজওয়ান, সঙ্গী খুশদিল শাহ করেন ১১ বলে ১৩ রান। সুবাদে ২ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রানের সংগ্রহ পায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। খুলনার হয়ে একটি করে উইকেট নেন ওয়াহাব রিয়াজ ও নাহিদুল ইসলাম।