সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের জনগণ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক মনে করে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
খালেদা জিয়ার কারাবন্দির দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি ।
ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া তার সমস্ত রাজনৈতিক জীবন জনগণের জন্য উৎসর্গ করেছেন। এদেশের মানুষ তাকে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক মনে করে, তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে একটি মামলায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে বেগম জিয়াকে। তিনি অসুস্থ, ঠিকমতো হাঁটতে পারেন না। তাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আজ আটক করে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার আইনে বিশ্বাস করে না। তারা সংবিধান কেটেকুটে তছনছ করে দিয়েছে। মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং আজকে জনগণের কোনো ম্যান্ডেট ছাড়াই শুধুমাত্র রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছে। আমরা যুদ্ধ করে যে চেতনার মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে এনেছিলাম। এই সরকার তার সবকিছু ধ্বংস করেছে।
শুধু তাই নয়, বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে সরকার। সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে তছনছ করে দিয়েছে। আপনারা জানেন, বিচার বিভাগের কোনো স্বাধীনতা আজ নেই। যে দেশের প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের নলের মুখে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়, পরে তার নামে মামলা টুকে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে অর্থনীতির সব সূচক একদম নিচের দিকে নামিয়ে দিয়েছে। কথাটা আমার নয়, কথাটা অর্থমন্ত্রীর। তিনি একদিন আগে পার্লামেন্টে বললেন সবকিছু সূচক ঊর্ধ্বমুখী তারপরের দিন বললেন অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না খারাপ। এ কথা বলার পর তার চাকরি থাকার কথা না। আজ সত্য কথা বের হয়ে গেছে। আজকে গার্মেন্টস গুলোর অবস্থা খুবই খারাপ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ দেশে লুটপাট চলছে। সেজন্য বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। পেট্টোলের দাম বাড়ানো হয়েছে। প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়েছে আজ। দেশ পরিচালনায় সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই রাষ্ট্রকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে তারা ব্যর্থ হয়েছে। কারণ তারা দুর্নীতিবাজ, দুর্নীতিগ্রস্ত। নিজেদের দুর্নীতির কারণে ঢাকার নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুর্নীতির কারণে ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি দুজনকে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে ভিন্নপথে ছদ্মবেশে তারা একদলীয় শাসন, বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। দেশের মানুষ আজ আমাদের স্বপ্ন, আমাদের প্রিয় নেতাকে মুক্ত দেখতে চায়। আন্দোলনের মধ্যদিয়ে মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে আমাদের।
সিটি করপোরেশন নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষ বয়কট করেছে। মাত্র ২৯ শহাংশ ভোট দিয়ে জনগণের প্রতিনিধি হওয়া যায় না। সব কিছুর নিয়ম আছে। ৫০ শতাংশের নিচে ভোট পড়লে নির্বাচন সম্পন্ন হয় না। আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন। এই নির্বাচন বাতিল করে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ কমিশনের মাধ্যমে পুনরায় নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন।
সবাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত দুই মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন, তাবিথ আওয়াল প্রমুখ।