ইউএস বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ইউএসবিসিসিআই) বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করার পাশাপাশি মিডিয়া কাভারেজের জন্য টাইম টেলিভিশন সহ একাধিক বাংলাদেশী মিডিয়াকে বিশেষ সম্মননা প্রদান করেছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের মধ্যকার স্বার্থ সংশ্লিস্ট বিষয় বিশেষ করে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের মধ্যে যারা যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসার প্রসার ঘটাতে চান তাদের সার্বিক সহযোগিতায় হাত বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
নিউইয়র্কের জ্যামাইকার হিলসাইড এভিনিউস্থ জাফরান গ্রিলে গত ৩১ জানুয়ারী সন্ধ্যায় আয়োজিত এক মিট দ্য প্রেসে ইউএসবিসিসিআই নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত তথ্য জানান। এতে ইউএসবিসিসিআই’র ‘বিজনেস ইন রিভিউ অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্ট ২০২২-২০২৩’ সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপনা করা হয়। অনুষ্ঠানে গত বছরের ন্যায় এবছরও ‘বিজনেস এক্সপো-২০২৩’ আয়োজন করার ঘোষণা দেয় হয়।
ইউএসবিসিসিআই’র অন্যতম ডিরেক্টর শেখ ফরহাদের তত্ত¡বধানে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মোহাম্মদ লিটন আহমেদ। এরপর বক্তব্য রাখেন এবং উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ভাইস প্রেসিডেন্ট বখত রুম্মান বিরতীজ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউএসবিসিসিআই’র সদস্য শেখ সাদিয়া আফরিন, শেখ ফারজানা, নাহিদ আহমদ, মোঃ বদরুদ্দোজা সাগর, আবু নাফে খান, ইসরাত জাহান মারিয়া, শাহ মোহাম্মদ আজিম।
অনুষ্ঠানে সংগঠনের পক্ষ থেকে ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন কর্মকান্ডের সারসংক্ষেপ এবং ২০২৩ সালে যে সকল কাজের টার্গেট নেয়া হয়েছে তার একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা তুলে ধরেন সংগঠনের বখত রুম্মান বিরতীজ। ২০২২ সালে ইউএসবিসিসিআই’র উল্ল্যেখযোগ্য কর্মকান্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নানান রকম সীমাবদ্ধতার মধ্যেও গত বছর সংগঠনের কিছু কাজ কমিউনিটিসহ সকল জায়গায় প্রশংসিত হয়েছে। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের কুটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদ্যাপন, ৩ দিনব্যাপি ইউএসবিসিসিআই ‘বিজনেস এক্সপো-২০২২’ আয়োজন, অন্যান্য চেম্বার অফ কমার্স এর সাথে এমওইউ সাইনিং, ইউএসবিসিসিআই কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ, ইউএসবিসিসিআই মহিলা উদ্যোক্তা সামিট এবং মহিলা উদ্যোক্তা পুরস্কার-২০২২ প্রদান এবং বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস উদযাপন উল্লেখযোগ্য।
এরমধ্যে ইউএসবিসিআই ‘বিজনেস এক্সপো ২০২২’ সবচেয়ে বেশি সাড়া পাওয়ার কতী উল্লেখ করে তিনি জানান, আমরা ব্যবসার নতুন নতুন উপাদান খুঁজে পেয়েছি এই বিজনেস এক্সপোর মাধ্যমে। তাই এই এক্সপো আমাদের কাছে বিশেষ স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এজন্য গতবছরের ন্যায় এবারও আমরা ২ দিন ব্যাপি (২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩) ‘ইউএসবিসিআই বিজনেস এক্সপো-২০২৩’ করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছি। এছাড়াও চলতি বছর আমরা আরো কিছু আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানের কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ইউএসবিসিসিআই ‘মহিলা উদ্যোক্তা সামিট-২০২৩’। যা আগামী ১৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি কমিউনিটিসহ সকলের স্বার্থে কিছু উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমও হাতে নিয়েছে ইউএসবিসিসিআই। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- যুক্তরাষ্ট্রে বিডি টেক্সটাইল এবং আরএমজি এক্সপেন্ডারেশন, রিয়েল এস্টেট এ টু জেড সেমিনার, উদ্যোক্তাদের জন্য এসবিএস/এসবিএ সাথে সেমিনার, গ্রান্ট নিয়ে সেমিনার। কিভাবে ব্যবসা সম্প্রসারণ করা যায়, আইটি এবং সফটওয়্যার, যুক্তরাষ্ট্রে কিভাবে একটি আইটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা যায় এবং কিভাবে ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করা যায়, ইবি-টু, বি-থ্রি এবং ইবিএস-এর উপর সেমিনার আয়োজন করা হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ইউএস-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ইউএসবিসিসিআই) হল এমন একটি সংগঠন যা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ব্যবসা সমৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য কাজ করে থাকে। এছাড়াও ক্রমবর্ধমান ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের চাহিদা পূরণে সংস্থাটি প্রতিশ্রæতিবদ্ধ। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসার মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন এবং একটি উদ্যোক্তা পরিবেশ তৈরি করাও অন্যতম লক্ষ্য। পাশাপাশি তথ্য সহায়তা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, উৎসব, ব্যবসায়িক রেফারেল, নেটওয়ার্কিং, সামাজিকীকরণ এবং আরও অনেক কিছুর উৎস এই ব্যবসায়িক সংগঠনটি। ইতিবাচক নানান কর্মের জন্য ইউএস-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের সম্প্রদায়ের ‘বিশ্বস্থ কণ্ঠ’ হিসেবে কাজ করতে চায়।
অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের উত্তরে লিটন আহমেদ বলেন, যে যাই বলুক আমরা আমাদেও কর্মকান্ডের মাধ্যমে প্রমান করতে চাই যে, ইউএসবিসিসিআই শো-আপ নির্ভর সংগঠন কিনা। তবে আমরা এটুকু বিশ্বাস করি কাজ করলে সমালোচনা হবে। আর কাউকে না কাউকে কাজ করতে হবে, দায়িত্ব নিতে হবে। অপর এক প্রশ্নের উত্তর তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষেও নই, বিপক্ষেও নই। আমরা ব্যবসায়ীদের পক্ষে। তবে কাজ করতে হলে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। তাই বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিস্ট মহলের সাথে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে আয়োজকরা বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা এলসি খুলতে না পারায় দেশ ও প্রবাসের অনেক ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। এব্যাপারে আমরাও ওরিড এবং সমস্যার ব্যাপারে সংশ্লিস্টদের দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা করছি।
এক প্রশ্নের উত্তরে লিটন আহমেদ জানান, নিউইয়র্ক ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য ষ্টেটের বাংলাদেশী-আমেরিকান ব্যবসায়ী ইউএসবিসিসিআই’র সদস্য আছেন। বর্তমানে ইউএসবিসিসিআই’র দেশ শতাধিক সদস্য রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলন শেষে বিগত বছরে মিডিয়া কাভারেজের জন্য আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মননা দেওয়া হয়। এ সম্মননাপ্রাপ্তরা হলেন, সাপ্তাহিক বাঙালী সম্পাদক কৌশিক আহমেদ, পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, টাইম টেলিভশনের সিইও ও বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক আবু তাহের, বাংলাদেশ প্রতিদিন উত্তর আমেরিকা সংস্করণের নির্বাহী সম্পাদক লাবলু আনসার, সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক মোহাম্মদ সাইদ, ইউএসএনিউজঅনলাইন.কম সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সেলিম, সাপ্তাহিক ঠিকানার ভাইস প্রেসিডেন্ট মুশরাত শাহীন, এটিএন বাংলা ইউএসএ’র নিউজ এডিটর কানু দত্ত, চ্যানেল ৭৮৬ এডিটর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, চ্যানেল আই’র যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি রাশেদ আহাম্মেদ এবং তুষার পিক-এর এম.বি. হোসেন তুষার। সূত্র : ইউএনএ