মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশের ১৫৫ রানের লিডের জবাবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে ধুঁকছে আয়ারল্যান্ড। দ্বিতীয় দিনশেষে ২৭ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে তারা। সাকিব ও তাইজুল ভাগ করে নেন ৪ উইকেট। এখনো লিড ভাঙতেই আইরিশদের প্রয়োজন ১২৮ রান।
টস জিতে আগে ব্যাট করা আইরিশরা প্রথম ইনিংসে অবশ্য বেশি দূর দৌড়াতে পারেনি। একাই ৫ উইকেট নিয়ে তাইজুল ইসলাম তাদের ২১৪ রানে থামান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে দ্রুত তিন উইকেট হারালেও মিডল অর্ডারের দৃঢ়তায় স্কোরবোর্ডে ৩৬৯ রান তোলে বাংলাদেশ, মুশফিকুর রহিম শতক হাঁকান।
১৫৫ রান পেছন থেকে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই সাকিব-তাইজুলের স্পিন তোপে পড়ে আয়ারল্যান্ড। দুই প্রান্ত থেকে দু’জনই ভয়ঙ্কর হয়ে দেখা দেন। প্রথম ইনিংসে মাত্র ৩ ওভার বল করা সাকিব দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেন নিজেই বল হাতে। উইকেটের দেখাও পেয়ে যান একই ওভারে। ০ রানে ফেরান জেমস ম্যাককালামকে।
এরপর জোড়া আঘাত হেনেছেন তাইজুল ইসলাম, ম্যারি কামিন্সকে (১) এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলার পর স্ট্যাম্প ভেঙেছেন আইরিশ অধিনায়ক এন্ডি বালবির্নির; ৩ রান করেন তিনি। চার বলের মাঝে তাইজুল এই দু’জনকে ফেরানোর পর ফের দৃশ্যপটে সাকিব, কার্টিস ক্যাম্ফারকে লিটন দাসের ক্যাচ বানান তিনি।
শেষ বিকেলটা অবশ্য দাঁতে দাঁত চেপে কাটিয়ে দেন পিটার মুর ও হ্যারি টেক্টর। আর কোনো উইকেট ফেলতে দেননি দু’জনে। জুটি গড়েছেন ৬৩ বলে ১৪ রানের। সুবাদে ১৭ ওভারে ২৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে দিন শেষ করেছে আয়ারল্যান্ড। ১০ রানে পিটার মুর ও ৮ রানে অপরাজিত আছেন হ্যারি টেক্টর। দু’টি করে উইকেট নেন সাকিব ও তাইজুল।
এর আগে ২ উইকেটে ৩৪ রান নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশ আরো ৬ রান যোগ করতেই হারায় মুমিনুল হকের উইকেট; ১৭ রান আসে তার ব্যাটে। এর আগে প্রথম দিনের শেষ বিকেলে নাজমুল হোসেন শান্ত ০ রানে ফেরার পর দিনের শেষ বলে ২১ রান করে আউট হন তামিম ইকবালও। ফলে ৪০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
সেখান থেকে দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। দু’জন মিলে খেলার নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনেন। গড়ে তোলেন দেড় শতাধিক রানের জুটি। দু’জন হাঁটতে থাকেন শতকের পথে। বিশেষ করে ব্যাট হাতে পাল্টা আক্রমণ চালান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সম্মুখ থেকেই দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি। প্রথম বল থেকেই দেখা দেন আক্রমণাত্মক মেজাজে।
তবে এ দিন আরো একবার সমর্থকদের হতাশ করেন সাকিব, শতক ছোঁয়ার সুযোগ আর সম্ভাবনা হাতছাড়া করেন তিনি। খুব কাছে গিয়ে ফেরেন ৯৪ বলে ৮৭ রান করে। সুবাদে ভাঙে মুশফিকের সাথে তার ১৫৮ রানের জুটি, যেই জুটি গড়েছিলেন দু’জনে মাত্র ১৮৮ বলে।
সাকিব হতাশ করলেও মুশফিক খেলতে থাকেন নিজের মতো করে, এক প্রান্ত আগলে রেখে। একপর্যায়ে তিন অংকের ঘর স্পর্শ করেন তিনি। তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ১০ম শতক। সময়ের সাথে সাথে তারও ব্যাট হয়ে ওঠে আগ্রাসী, রান বাড়াতে থাকেন দলেরও।
মুশফিককে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছিলেন লিটন দাস। ব্যাট হাতে আজো ছড়াচ্ছেন সুবাস। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি, ৪১ বলে ৪৩ রানে থামেন লিটন। ভেঙেছে মুশফিকের সাথে তার ৮৪ বলে ৮৭ রানের জুটি। এরপর মেহেদী মিরাজের সাথে ৫৭ বলে ৪৫ রানের জুটি গড়েন মুশফিক, যেখানে অবশ্য ৩১ রানই মিরাজের।
এ দিন দ্রুত গতিতে ক্যারিয়ারের চতুর্থ অর্ধশতক তুলে নেন মিরাজ। এরই মাঝে ফেরেন মুশফিকুর রহিম। আউট হওয়ার আগে খেলেন ১৬৭ বলে ১২৬ রানের ইনিংস। এরপর ম্যাকবির্নির শিকার হয়ে দ্রুত ৪ উইকেট হারালে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে দ্রুত রান তুলতে গিয়ে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ৫৫ রান করে আউট হন মিরাজ।