গত ৫ ফেব্রুয়ারি কাতারের রাজধানী দোহা সফর করেছেন ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ-এর প্রধান ইয়োসি কোহেন। তার সফরের উদ্দেশ্য ছিল, হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজায় কাতারি অর্থসহায়তা অব্যাহত রাখা। এই গোপন সফরের কথা প্রকাশ করেন খোদ ইসরাইলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও প্রভাবশালী রাজনীতিক আভিগদর লিবারম্যান।
শনিবার ইসরাইলের চ্যানেল ১২-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগের সুরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মোসাদ প্রধান কোহেন ও ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধান হার্জল হেলেভিকে কাতারে পাঠিয়েছেন। তার বক্তব্য, তারা গিয়ে কাতারকে অনুনয় করে বলেছেন যেন হামাসকে অর্থ সরবরাহ অব্যাহত রাখা হয়।
লিবারম্যান বলেন, ‘মিসরীয় ও কাতারি কর্তৃপক্ষ হামাসকে নিয়ে ক্ষুব্ধ। তারা হামাসের সাথে সব সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করতে যাচ্ছিল। কিন্তু অকস্মাৎ নেতানিয়াহু যেন হামাসের ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন। তিনি মিসর ও কাতারকে চাপ দিলেন যেন তারা আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রাখে।’ তিনি বলেন, নেতানিয়াহুর এই নীতি ‘সন্ত্রাসবাদের কাছে আত্মসমর্পণে’র শামিল।
এ ছাড়া হিব্রু সংবাদ ওয়েবসাইট ওয়াল্লা জানিয়েছে, কোহেন ও হালেভি দোহায় ২৪ ঘণ্টারও কম সময় অবস্থান করেছেন। তারা সেখানে গাজা-বিষয়ক কাতারি দূত মোহাম্মদ আল-এমাদি ও কাতারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মোহাম্মদ বিন আহমেদ আল-মিসনাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন।
ওই সফরের ফলই কি না, শুক্রবার দোহা ঘোষণা দেয় যে, গাজা তীরে বিদ্যমান আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধি করা হবে। ইসরাইলের অনুমোদন সাপেক্ষে ২০১২ সালের পর থেকে গাজায় প্রায় ১০০ কোটি ডলারের সহায়তা দিয়েছে কাতার। তবে সাম্প্রতিক ত্রাণসহায়তার অংশ হিসেবে, ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ গাজার এক লাখ ২০ হাজার দরিদ্র পরিবার ১০০ ডলার হিসেবে সহায়তা পাবে। এ ছাড়া অনেক দরিদ্র পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ঠিক করার অর্থ পাবে। ওই পরিবারগুলোর ৫০০ তরুণ বিয়ের সহায়তা পাবে। এ ছাড়া গাজার শিক্ষার্থীদের শিক্ষার খরচের জন্য ব্যয় করা হবে ১ মিলিয়ন ডলার।
আল এমাদি বলছেন, গাজা তীরের মানবিক সঙ্কট কাটাতেই এই সহায়তা দেয়া হচ্ছে। গাজায় সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে এই অর্থ ব্যয় করা হবে। দক্ষিণ গাজার রাফা এলাকায় নতুন হাসপাতাল নির্মাণে ব্যয় হবে ২৪ মিলিয়ন ডলার। ২০১৯ সালের নভেম্বরে কাতার ছয় মাসে ১৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে গাজার সরকারি কর্মচারীদের বেতন ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জ্বালানি ক্রয়ের পেছনে। সূত্র : আরব নিউজ, টাইমস অব ইসরাইল ও হারেৎজ।