ইউক্রেনের মেলিটোপোল শহরের মেয়র ইভান ফোদোরভ, যিনি এখন পালিয়ে গিয়ে অন্য শহরে থাকেন, বলেন হাজার হাজার গাড়ি এসব শহর থেকে বেরিয়ে যেতে শুরু করলে রাস্তায় পাঁচ ঘণ্টার যানজট তৈরি হয়।
আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি কমিশন আইএইএ-র পরিচালক রাফায়েল গ্রসি বলেছেন জাপোরিশা পারমাণবিক কেন্দ্রের পরিস্থিতি ক্রমেই “অনিশ্চিত এবং সম্ভাব্য বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।“
আইএইএ-র এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “কেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণে কর্মীরা এখনো সেখানে রয়েছে তবে তাদের মধ্যে নিজেদের এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে মানসিক চাপ এবং উত্তেজনা বাড়ছে।“
বিবৃতিতে আরও বলা হয় কেন্দ্রে অবস্থানরত বিশেষজ্ঞরা খবর পেয়েছেন যে জাপোরিশা কেন্দ্রের সিংহভাগ কর্মী যে শহরে থাকেন সেই এনারহোদার থেকে লোকজন চলে যাচ্ছে।
শুক্রবার রাশিয়ার নিয়োগ করা জাপোরিশা অঞ্চলের প্রশাসনিক প্রধান ইয়েভগেনি বালিতস্কি বলেন “রণাঙ্গনের কাছাকাছি বসতিগুলোতে গত কয়েকদিন ধরে শত্রুরা গোলাবর্ষণ করছে।“
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লেখেন, “এই অবস্থায় আমি ঐসব বসতি থেকে প্রথম দফায় শিশু ও তাদের অভিভাবক, বয়স্ক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং হাসপাতালের রোগীদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
গত বছর রাশিয়া জাপোরিশা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সহ অঞ্চলের বিশাল এলাকা দখল করে। সেসময় এই কেন্দ্রের কাছে গোলাবর্ষণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় কেন্দ্রটির নিরাপত্তা নিয়ে প্রচণ্ড আতংক তৈরি হয়।
গত মার্চেও আইএইএ সাবধান করে যে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কেন্দ্রটি এখন ডিজেল জেনারেটরে চলছে।
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক হামলা শুরুর পর থেকে জাপোরিশা পারমাণবিক কেন্দ্রের অনেক কর্মী চলে গেছে। তবে আইএইএ বলছে, “সেখানকার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে কেন্দ্রটি নিরাপদে চালানোর মত প্রয়োজনীয় লোক এখনো রয়েছে।“
রুশ সৈন্যরা জাপোরিশা অঞ্চলের সিংহভাগই নিয়ন্ত্রণ করলেও আঞ্চলিক রাজধানী শহর জাপোরিশা ইউক্রেন সৈন্যদের দখলে। ইউক্রেন নিয়ন্ত্রিত এই রাজধানী শহরটি রুশ নিয়ন্ত্রিত এনারহোদা শহরের উত্তর-পূর্বে দানিপ্রো জলাধারের ওপারে।
রোববার ইউক্রেনের আঞ্চলিক কর্মকর্তারা জানান রণাঙ্গনের কাছাকাছি শহরগুলো থেকে লোকজনকে রুশ নিয়ন্ত্রিত আরও ভেতরের শহর বারদিয়ানস্ক এবং প্রিমর্স্ক শহরে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
মেলিটোপাল শহরের মেয়র ইভান ফেদেরেভ টেলিগ্রাম চ্যানেলে লিখেছেন যেসব শহর থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে সেখানকার দোকানগুলো খালি হয়ে গেছে। হাসাপাতালগুলো রোগীদের আগেভাগেই ছেড়ে দিচ্ছে।
তিনি আরও দাবি করেন এসব শহরে মোতায়েন বহু রুশ সৈন্যও চলে যাচ্ছে। তবে তার এই দাবি বিবিসি নিরপেক্ষ সূত্রে যাচাই করতে পারেনি।