বাজারে তেল, চিনি, আদা, রসুন, পেঁঁয়াজ, মাংস, ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। এতে ভোক্তাদের বাজার খরচ অনেকখানি বেড়ে গেছে। প্রয়োজন থাকলেও চড়া বাজারে অনেক পণ্যেরই নাগাল পাচ্ছে না তারা। সবজির দামেও যেন আগুন লেগেছে। তরিতরকারির পেছনে খরচ বেড়ে যাওয়ায় মুশকিলে পড়েছেন খেটে খাওয়া ও নিম্নআয়ের মানুষ।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী বাজারে কারখানা শ্রমিক মো. আবু বক্কর বলেন, মাছ, মাংস, ডিম এসব তো আমাদের মতো অল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে। শাক-সবজি যে কিনে খাব, সেটারও উপায় নেই। যে সবজিতেই হাত দিচ্ছি, সেটা ৭০ থেকে ৮০ টাকা। রান্না করতে হলে তেল, পেঁয়াজ, রসুন, মসলা তো লাগবেই। সেগুলো না কিনে তো উপায় নেই। কিন্তু সেগুলোর পেছনেই খরচ বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। এগুলো কেনার পর বাজার করার পয়সা থাকে না হাতে। সামান্য আলুভর্তা, ডিমভাজি আর ডাল খাব যে তাতেও খরচ বেড়ে গেছে।
ঈদের পর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজ, রসুন, আদার দাম। প্রতিকেজি পেঁয়াজে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া প্রতিকেজি আদা কিনতেও গুনতে হচ্ছে ৩০০ টাকার কিছু কম বা বেশি, যা গত বছর একই সময় ছিল ৯০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে। অন্যদিকে আমদানি করা চীনা রসুনের কেজিপ্রতি দাম ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত।
গরু ও খাসির মাংসের উচ্চমূল্যের কারণে অনেকেই এগুলোর দোকানের দিকে পা বাড়াচ্ছেন না। ব্রয়লার মুরগির বাজারে এখনো স্বস্তি ফেরেনি। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২২৫ টাকা। কোথাও কোথাও এর বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগির দাম রাখা হচ্ছে প্রতিকেজি ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা। ডিমের দামও বেড়েছে। ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের দাম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৪ টাকা পর্যন্ত। সাদা ডিমের দাম প্রতি ডজন ১৩০ টাকা। দেশি মুরগি ও হাঁসের ডিমের দাম আকাশচুম্বী, যা বেশির ভাগ ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার বাইরে রয়েছে।
গত দুই-তিন দিনের ব্যবধানে নতুন করে সবজির দামও বেড়েছে। রাজধানীর কারওয়ানবাজারে তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হলেও অন্যান্য এলাকার বাজারে কেজিপ্রতি অন্তত ১০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে গতকাল প্রতিকেজি বেগুন, পটোল, মুলা, বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত। ঝিঙে, ধুন্দল, করলা, কাঁকরোল, বরবটি, ভেণ্ডি, চিচিঙা বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত।
বাজারে সস্তা মাছও কিনতে হচ্ছে হিসাব করে। তেলাপিয়া বা পাঙ্গাশ মাছের কেজির দামও গিয়ে ঠেকেছে ২২০ টাকায়। অপরদিকে রুই-কাতলায় গুনতে হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত।