আজও কি গ্রেপ্তার করা হবে ইমরান খানকে ! তার আশঙ্কা এমনই। ৯ই মে গ্রেপ্তারের পর তাকে মুক্তি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ফিরেছেন জামান পার্কের বাসায়। কিন্তু সেখানে শান্তিতে নেই। ফেরার পর থেকেই তার বাসভবন ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে কয়েকবার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। কিন্তু সরকার সে পথে যায়নি। আজ মঙ্গলবার আল কাদির ট্রাস্ট মামলায় ইসলামাবাদ হাইকোর্টে হাজিরা দিতে যাবেন ইমরান। তার আশঙ্কা সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, মঙ্গলবার আমি ইসলামাবাদ আদালতে একাধিক মামলায় জামিনের আবেদনের জন্য হাজিরা দেবো।
৮০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে যে আমাকে সেখানে গ্রেপ্তার করা হবে। দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় নিয়েও অভিযোগ তোলেন ইমরান খান। তিনি বলেন, শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নারী ও পুরুষ সহ মোট ১০ হাজারেরও বেশি পিটিআই কর্মী-সমর্থকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিজের জামান পার্কের বাড়ি থেকে রোববার ভিডিও লিংকের মাধ্যমে সিএনএনকে ওই সাক্ষাৎকার দেন ইমরান খান। এ সময় তিনি বলেন, আমাদের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতেই এসব কিছু করা হচ্ছে। আমার দলে জ্যেষ্ঠ নেতাদের সবাই এখন কারাগারে। তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি এমন যে, বিচারক ও আদালতের সিদ্ধান্তও বাতিল করা হচ্ছে। সমপ্রতি হাইকোর্টের একজন বিচারপতি পিটিআই’র এক নেতাকে জামিন দেয়ার পর পুনরায় গ্রেপ্তার করায় কান্না করেছিলেন।
পিটিআই’র চেয়ারম্যান বলেন, সরকার আমাকে থামিয়ে দিতে চায়। কারণ তারা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়ে রয়েছে। সাক্ষাৎকারে ইমরান খান গত বছরের অক্টোবরে তাকে হত্যাচেষ্টার কথাও স্মরণ করেন। তিনি বলেন, আমি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলাম, আমাদের গভর্নরকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছিল, আমাকেও সেভাবে হত্যা করা হবে। তার প্রাণনাশের হুমকি এখনো আছে বলে দাবি করেন পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, দুইটি মামলার শুনানির জন্য ইমরান খান ৯ই মে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে গেলে অন্য একটি মামলায় তাকে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুই দিনের মাথায় দেশটির সুপ্রিম কোর্ট ওই গ্রেপ্তারকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে ইমরানকে দ্রুত হাইকোর্টে উপস্থাপনের নির্দেশ দেন। ১২ই মে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে সুরক্ষামূলক জামিন পান তেহরিক-ই-ইনসাফ নেতা। পরে তার জামিনের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩১শে মে পর্যন্ত করা হয়।
আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় গ্রেপ্তারের পরই গোটা পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। লাহোর, ইসলামাবাদ, রাওয়ালপিন্ডি, ফয়েজাবাদ, মুলতান, পেশোয়ার সহ একাধিক জায়গায় পিটিআই কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভ করেন। সরকারি অফিস ও সামরিক স্থাপনায় হামলা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী নামানো হয়। তাদের সঙ্গেও দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় পিটিআই কর্মী-সমর্থকদের। দেশব্যাপী এই দাঙ্গার জন্যও ইমরান খানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সূত্র : মানবজমিন