গত ২১ মে রবিবার ব্রুলিনের চার্চ ও ম্যাকডোনাল্ড এভিনিউতে অনুষ্ঠিত মেলায় মানুষের ঢল নেমেছিল। আনুমানিক ৩০,০০০ নিউইয়র্কবাসী এই মেলায় উপস্থিত হয়ে এটিকে একটি বৃহৎ প্রাণের মিলন মেলায় পরিণত করে। বাংলাদেশ আমেরিকান ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটির আয়োজনে এই মেলার অন্যতম সংগঠক সভাপতি কাজী আজম, সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুল হক চৌধুরী, কনভেনর শাহ নেওয়াজ, মেম্বার সেক্রেটারি ফিরোজ আহমেদ ও সাংস্কৃতিক চেয়ারম্যান ছিলেন এস এম ফেরদৌস।
দুপুর দুটায় মেলার ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ। বেলুন উড়ান ৬৬ প্রিসিংক্টের কমান্ডিং অফিস ক্যাপ্টেন ডগলাস মুডি। আরো উপস্থিত ছিলেন মাইমোনাইডস হসপিটালের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডগলাস। উদ্বোধনকালে কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, লুৎফুল করিম, আলী ইমাম সিকদার, কাজী নয়ন, গোলাম মাহমুদ, জাহাঙ্গীর সোহরাওয়ার্দী, নূরুল আনোয়ার বেঙ্গল, ইকবাল হায়দার, বখতিয়ার উদ্দিন, হেলাল উদ্দিন, সালেহ মানিক, প্রফেসর আজাদ, দুলাল মিয়া, বাদল মির্জা, আশরাফুল হাসান, গোলাম কিবরিয়া, সালেহ আহমেদ, সোহাগ সহ আরো অনেকে।
অনুষ্ঠানে মূলধারার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন পাবলিক অ্যাডভোকেট জুমানি উইলিয়ামস, ডিস্ট্রিক্ট ৩৯ এর কাউন্সিল মেম্বার শাহানা হানিফ, ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি এরিক গঞ্জালেজ, মেয়র এরিক এডামসের প্রতিনিধি সুকরানি সহ আরো অনেকে।
বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে মূল মঞ্চে অনুষ্ঠান শুরু হলে চারুকলার ছোট ছোট শিল্পীরা তাদের চমৎকার পারফরমেন্স দিয়ে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করে।
সাংস্কৃতিক পর্বে সংগীত পরিবেশন করেন দিনাত জাহান মুন্নি, রানু নেওয়াজ, শাহ মাহবুব, শামীম সিদ্দিকী, চন্দ্রা রায়, আসমা জাহান, মিম, তৃনিয়া হাসান, অনীক রাজ, রিয়া রহমান, তাহমিনা, টিপু, আবুল বাসার প্রমুখ।
মেলায় কাপড় চোপড়, রকমারি ফুড, গিফট আইটেম, বিভিন্ন হোম কেয়ার, মেডিকেল সার্ভিস সহ প্রায় একশত স্টল বসে।সন্দ্বীপ সোসাইটি আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে সদস্য সংগ্রহের জন্য একটি স্টল খোলে যা অনেকের নজরে পড়ে।
শিশুদের জন্য ছিল এবার স্পেশাল অনেক রাইডের ব্যবস্থা। মেলায় ব্যাপক জনসমাগম হওয়ায় ৬৬ প্রিসিংক্টে অনুরোধ করলে তারা আটটা পর্যন্ত মেলার সময় বর্ধিত করে। মেলায় কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এটর্নি মঈন চৌধুরী, ফাহাদ সোলায়মান, আহসান হাবিব, নূরুল আজিম, গোলাম জিলানী, আকাশ রহমান, মোহাম্মদ হানিফ, সৈয়দ এম রেজা, ইলিয়াস মিয়া, আলমগীর খান আলম, জাহাঙ্গীর জয়। অনুষ্ঠানের সার্বিক উপস্থানায় ছিলেন এস এম ফেরদৌস ও আশরাফুল হাসান বুলবুল। অনুষ্ঠান শেষে সভাপতি কাজী আজম উপস্থিত সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এইভাবে নিউইয়র্কবাসী যদি সহযোগিতা করেন তবে আগামীতেও আরো ভালো মেলা উপহার দেবেন। তিনি কনভেনর শাহ নেওয়াজ ও সকলের প্রতি সার্বিক সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান।
মেম্বার সেক্রেটারি ফিরোজ আহমেদ সার্বিক সহযোগিতার জন্য দর্শক, কলা কুশলী ও সকল আমন্ত্রিত অতিথিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন দেখা হবে ২০২৪ সালে আবার।
বাংলাদেশীরা সবক্ষেত্রেই ইতিবাচক পথে অগ্রসর হচ্ছেঃ আবু জাফর মাহমুদ
ব্রæকলীনের চার্চ এভিনিউতে প্রায় ত্রিশ হাজার বাংলাদেশীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বর্ণাঢ্য পথমেলা। রবিবার আমেরিকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ সোসাইটি আয়োজিত মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী কমিউনিটির প্রিয় ব্যক্তিত্ব, মানবসেবায় প্রেসিডেন্টের আজীবন সম্মাননা স্বর্ণপদক প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশীরা তাদের নিজস্ব শক্তি, চেতনা আর ভালোবাসা নিয়ে এই আমেরিকায় অসামান্য সাফল্যের দৃষ্টান্ত গড়ে তুলেছেন। মূলধারার রাজনীতি থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রেই তারা ইতিবাচকভাবে অগ্রসর হচ্ছে। আমরা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির ঢেউ তুলছি। এই ঢেউ অন্য জাতিগোষ্ঠির জন্য অনুকরণীয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্কের মাইমোনাইডস হসপিটালের ভাইস প্রেসিডেন্ট জবলাস ডগলাস, এনওয়াইপিডি’র ৬৬ প্রিসিংক্ট কমান্ডিং ইনচার্জ ডগলাস মোডি, আমেরিকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ সোসাইটির সভাপতি কাজী আযম, সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুল হক চৌধুরী, ফিরোজ আহমেদ, এস এম ফেরদৌসসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সুধীবৃন্দ।
তিনি তার নিজ হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানের বিস্তৃতি প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের মানুষের জন্য আমরা ‘কাচারি ঘর’ করেছি। এই ‘কাচারি ঘর’ বাঙালির ঐতিহ্য আমেরিকানদের মাঝে পরিচিত করিয়ে দিচ্ছি। আমরা কাচারিঘরে বসে চা কফি খাই। আমরা আমাদের সামাজিকতার চর্চা করি। এই কাজটির মধ্যে আমি নিজে থাকছি, অন্যদের শেখাচ্ছি। আমাদের সাংস্কৃতিক চেতনা আজ মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। তিনি উপস্থিত সবাইকে আমন্ত্রণ জানান, বাংলা সিডিপ্যাপ সার্ভিসেস ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের অফিসে কাচারি ঘরে।
অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে ছিল বিরামহীন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এতে নিউইয়র্কে বসবাসকারী বাংলাদেশী কমিউনিটির সুপরিচিত সব শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশ করেন।