যুক্তরাষ্ট্রে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১১০ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশটিতে এই রোগে মৃত্যু হয়েছে ছয় জনের।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্তদের মধ্যে ৪৮ জন চীন ও জাপান থেকে ফিরিয়ে আনা। এদের মধ্যে ৪৫ জনই প্রমোদ তরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসের যাত্রী, করোনাভাইরাস আতঙ্ক নিয়ে বিভিন্ন বন্দর ঘুরে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে নোঙর করা ওই প্রমোদ তরীর যাত্রীদের মাধ্যমে আরও অনেক দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে।
এর বাইরের তিনজন চীনের উহান থেকে ফিরিয়ে নেওয়া, যে শহরে প্রথম এই ভাইরাস সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল। এদের বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের ১২টি স্টেটে ৫৮ জনের নভেল করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে বলে সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। স্টেটগুলোর মধ্যে ওয়াশিংটনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে, ১৮ জন। রোগটিতে মারা যাওয়া ছয়জনই এই স্টেটের। এর পরে আক্রান্তের দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া, ২০।
এর বাইরে ইলিনয়ে চারজন, নিউ ইয়র্কে দুইজন, ফ্লোরিডায় দুইজন, অ্যারিজোনায় একজন, ম্যাসাচুসেটসে দুইজন, ওরেগনে তিনজন, রোড আইল্যান্ডে দুইজন, উইসকনসিনে একজন, নিউ হ্যাম্পশায়ারে একজন এবং জর্জিয়ায় দুজনের শরীরে নভেল করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে এই ভাইরাসে যে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের চারজনই ওয়াশিংটন স্টেটের সিয়াটল শহরের কাছের কির্কল্যান্ডের একটি নার্সিং হোমে ছিলেন। লাইফ কেয়ার সেন্টার নামের এই ফ্যাসিলিটির ৫০ জনের বেশি বাসিন্দা ও কর্মীর করোনাভাইরাসের লক্ষণ রয়েছে, তাদের পরীক্ষা করা হবে বলে সেখানকার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সেনেট হেলথ কমিটির মুখোমুখি হতে হয় জাতীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদেরনভেল করোনাভাইরাস নিয়ে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সেনেট হেলথ কমিটির মুখোমুখি হতে হয় জাতীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদেরওয়াশিংটন স্টেটের সেনেটর প্যাটি মুরে সিএনএনকে বলেছেন, তার স্টেটে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে তাকে আভাস দেওয়া হয়েছে। স্টেটের বাসিন্দারা সত্যিই আতঙ্কগ্রস্ত। “অসুস্থরা আমাকে বলেছে, তারা পরীক্ষা করাতে চায়। কিন্তু সেজন্য তাদের কোথায় যেতে হবে তা বলা হয়নি। আমার কাছে একথাও এসেছে যে, লোকজন পরীক্ষা করার পরে ফলাফল পেতে অনেক দেরি হচ্ছে।
“এটা খুবই দুর্ভাগ্যের যে, আমার স্টেট ও দেশের মানুষ এটাও জানতে পারবে না যে তারা করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে কি না।” নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ডু কুমো মঙ্গলবার সকালে এই স্টেটে দ্বিতীয় ব্যক্তির করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার খবর জানান। ওয়েস্টচেস্টারের ওই বাসিন্দা ম্যানহাটনে কাজ করেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এর আগে সম্প্রতি ইরান ঘুরে যাওয়া ৩৯ বছর বয়সী একজন স্বাস্থ্যকর্মীর দেহে এই ভাইরাস ধরা পড়ে। নতুন যিনি আক্রান্ত হয়েছেন তিনি চীন বা করোনাভাইরাস আক্রান্ত কোনো দেশে যাননি। তবে সম্প্রতি মিয়ামি গিয়েছিলেন। “কমিউনিটির বাসিন্দাদের মধ্যে রোগ ছড়ানোর যে ঘটনা, এটা সে রকম বলেই মনে করা হচ্ছে,” বলেছেন নিউ ইয়র্কের গভর্নর।